বিএনএ, রাঙামাটি : জাতীয় সংসদের ২৯৯ তম (রাঙামাটি) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পত্র নিয়েছেন রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ সদস্য দীপংকর তালুকদার (এমপি) এবং জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা।
রোববার (১৯ নভেম্বর) আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে দীপংকর তালুকদারের দলীয় মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেন তার অনুসারীরা এবং একই দিন মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন নিখিল কুমার চাকমার অনুসারীরাও।
মনোনয়ন ফরম নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে নিখিল কুমার চাকমা বলেন, দলীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছি। আমি আশাবাদী সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাঙামাটি আসনের দলীয় মনোনয়নের বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
একই দিনে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ সদস্য দীপংকর তালুকদারের মনোনয়ন পত্র সংগ্রহের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বর জানান, দলের পক্ষ থেকে আজ জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি দীপংকর তালুকদার মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, দীপংকর তালুকদার ছাড়া আমাদের কোনো ভাবনা নেই। পার্বত্য রাঙামাটি জেলায় তার বিকল্প আমাদের কোন প্রার্থী নেই। তার নেতৃত্বে আমরা দ্বাদশ সংসদীয় নির্বাচনে অংশ নিতে চাই এবং বিজয়ী হতে চাই।
দীপংকর তালুকদারের বিকল্প যদি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ অন্য কাউকে দলীয় মনোনয়ন দেন তার জন্য কাজ করবেন কিনা এমন প্রশ্নে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখনো সেই সময় আসেনি। যখন আসবে তখন দেখা যাবে।
রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের কয়েকজন সিনিয়র নেতাকর্মী জানান, রাজনৈতিক জীবনের ৩২ বছরে এই প্রথম দলীয় মনোনয়ন পত্র সংগ্রহকালে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন দীপংকর তালুকদার। এর আগে রাঙামাটি ২৯৯ আসন থেকে টানা ছয়টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একক মনোনয়ন চেয়েছেন ও মনোনীত হয়েছেন দীপংকর।
তথ্য মতে, পাহাড়ের প্রবীণ রাজনীতিবিদ দীপংকর তালুকদার। যিনি ৯০’র দশক থেকে রাঙামাটি ২৯৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে করে আসছেন। এখন পর্যন্ত রাঙামাটি আসন থেকে ছয়টি নির্বাচনের মধ্যে চারটিতেই জাতীয় সংসদ সদস্য সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। মাঝখানে ২০০১ সালে বিএনপির সংসদ সদস্য মণিস্বপন দেওয়ান এবং ২০১৪ সালে আঞ্চলিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির স্বতন্ত্র প্রার্থী ঊষাতন তালুকদার এর কাছে পরাজিত হন। বর্তমানে তিনি রাঙামাটি ২৯৯ আসনের এমপি।
উল্লেখ্য যে, দীপংকর তালুকদার কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য এবং রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এ সরকারের আমলে সংসদ সদস্য ছাড়াও তিনি খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ছাত্রজীবনে তিনি সরাসরি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার পর অন্যতম প্রতিবাদী ছাত্র নেতা ছিলেন। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর প্রতিবাদ করে তিনি ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন।
তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এবারই প্রথম দীপংকর তালুকদার ছাড়াও রাঙামাটি আসন থেকে অন্য কোনো প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন। রাঙামাটি আওয়ামীলীগে গ্রুপিং থাকলেও সর্বশেষ জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে দলীয় সভাপতির পদ নিয়ে নিখিলের সঙ্গে রাজনৈতিক বৈরিতার বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও সেই সম্মেলনে দীপংকর ফের জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হন।
রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, দীপংকর তালুকদার, নিখিল কুমার চাকমা ছাড়াও এবারের নির্বাচনে কয়েকজন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করতে পারেন।
বিএনএনিউজ/ কাইমুল ইসলাম ছোটন/এইচ.এম।
