31 C
আবহাওয়া
১:৩১ পূর্বাহ্ণ - মে ১৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ‘হামাস’ কীভাবে এত শক্তিশালী?

‘হামাস’ কীভাবে এত শক্তিশালী?

হামাস’ কীভাবে এত শক্তিশালী?

বিএনএ, ঢাকা: হামাস। আরবি শব্দ। যা বাংলায় উদ্দীপনা। হামাসের পুরো নাম হারাকাত আল-মুকাওয়ামা আল-ইসলামিয়া। যার বাংলা অর্থ ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন। ১৯৮৭ সালে কট্টর ইসরায়েল বিরোধী পঙ্গু আধ্যাত্মিক নেতা শেখ আহমাদ ইয়াসিনের নেতৃত্বে আবদেল আজিজ আল-রান্তিসি ও মাহমুদ জহুর ১৯৮৭ সালে হামাস প্রতিষ্ঠা করেন।
হামাস প্রাথমিকভাবে দুটি উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হয়।

YouTube player

প্রথমত, এর সামরিক শাখা ইজ্জেদিন আল-কাশেম ব্রিগেডসের মাধ্যমে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া।

দ্বিতীয়ত, ফিলিস্তিনে বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কর্মসূচি পরিচালনা করা। সংগঠনটির সনদ অনুযায়ী তারা ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

হামাস ইজরায়েলসহ ফিলিস্তিনকে ইসরায়েলি দখল থেকে মুক্ত করতে এবং বর্তমানে ইসরায়েল, পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকা এলাকায় একটি ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৩ সালের মধ্যে গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রথম ইন্তিফাদা বা বিদ্রোহ শুরু হয়।

১৯৯৩ সালে অসলো শান্তিচুক্তির মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ গঠন করে গাজা ও পশ্চিম তীরের কিছু এলাকায় সীমিত স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হয়। ২০০৪ সালে ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যুর পর হামাস ও ফাতাহ’র মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয় এবং তা সহিংসতায় রূপ নেয়।

২০০৪ সালের ২২ মার্চ ফজরের নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় হামাসের প্রতিষ্ঠাতা পঙ্গু আহমাদ ইয়াসিনকে তার হুইল চেয়ারে ক্ষেপনাস্ত্র ছুড়ে হত্যা করে ইসরায়েল। অন্তত দু’লাখ লোকের ঢল নেমেছিল তার জানাযায়। পরের মাসেই নিহত হন আজিজ আল-রান্তিসি। তখন থেকে সংগঠনটির প্রতি ফিলিস্তিনিবাসীর সমর্থন ও ভালবাসা বেড়ে যায়। হামাসের বর্তমান প্রধান খালেদ মিশাল।গাজায় যুগের পর যুগ চলা অবরোধ শিথিল করতে কাতার, মিসর ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের ওপর চাপ তৈরি করার চেষ্টা ছিল হামাসের।

২০০৫ সালে দ্বিতীয় ইন্তিফাদার বা বিদ্রোহের পর গাজা থেকে সেনা ও ইহুদি বসতি সরিয়ে নেয় ইসরায়েল। ২০০৬ সালে জানুয়ারীতে অনুষ্ঠিত ফিলিস্তিনি পার্লামেন্টে সংসদীয় নির্বাচনে অধিকাংশ আসনে জয়ী হয়।

২০০৭ সালে হামাস ফাতাহ সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীকে পরাজিত করে গাজার দখল নিয়ে নেয়। সেই থেকে গাজা শাসন করছে হামাস। হামাস ক্ষমতায় আসার পর গাজা অবরুদ্ধ করে ইসরায়েল। এ কারণে গাজাকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত কারাগার বলা হয়। গাজার জনগণের চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ ও পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। ইসরাইলের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব রাষ্ট্রসমূহ ফিলিস্তিনে সাহায্য বন্ধ করে দেয়। একই সঙ্গে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে আখ্যায়িত করে হামাসকে। কিন্তু ইরান, রাশিয়া তুরস্ক চীন, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া হামাসকে স্বাধীনতাকামি সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে অর্থ অস্ত্রসহ বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগীতা করে যাচ্ছে। এসব দেশের সহযোগীতায় হামাস এখন ইসরায়েলের মূর্তিমান আতঙ্ক।

২০০৯ সাল থেকে সমুদ্রপথে গাজার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে রেখেছে ইসরায়েলি নৌবাহিনী । এ কারণে ব্যাপক অর্থনৈতিক চাপে আছে গাজার ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা। গাজায় যুগের পর যুগ চলা অবরোধ শিথিল করতে ইরান, রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া কাতার, মিসর ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের ওপর চাপ তৈরি করার চেষ্টা করে যাচ্ছে হামাস।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া বেশ খানিকটা এগিয়ে গিয়েছিল। এই প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস “অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড” অভিযান অন্যতম উদ্দেশ্য হতে পারে। এই হামলা আকস্মিক হলেও সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ছিল না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিএনএ নিউজ/ শাম্মী, ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ