27 C
আবহাওয়া
৭:৫৫ অপরাহ্ণ - মার্চ ২৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » কাঁকড়া চাষে ব্যবহৃত হচ্ছে নোবিপ্রবির সম্পূরক খাদ্য

কাঁকড়া চাষে ব্যবহৃত হচ্ছে নোবিপ্রবির সম্পূরক খাদ্য

কাঁকড়া চাষে ব্যবহৃত হচ্ছে নোবিপ্রবির সম্পূরক খাদ্য

বিএনএ, নোবিপ্রবি : বর্তমানে দেশে খুলনা এবং কক্সবাজারে শীলা কাঁকড়া চাষ করা হয়ে থাকে। বিদেশে এর চাহিদা বেশী হওয়ায় কাঁকড়া রপ্তানির মাধ্যমে প্রতিবছর ৩০-৪০ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় যোগ হচ্ছে৷ কিন্তু কাঁকড়া চাষের জন্য চাষীদের সম্পূর্ণরূপে প্রকৃতির উপর নির্ভর করতে হয়। চাষীরা সাধারণত বিভিন্ন উপকূলীয় মোহনা এলাকা ও ম্যানগ্রোভ এলাকা থেকে কিশোর কাঁকড়া আহরণ করে তা মোটাতাজাকরণ করে থাকেন৷ এছাড়াও নরম খোলসের কাঁকড়ার চাষ ও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় অনিয়ন্ত্রিত আহরণ মহোৎসব চলছে, যা জীব বৈচিত্র্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।

বিদেশে কাঁকড়ার চাহিদা বেশী থাকায় প্রকৃতি থেকে কিশোর কাঁকড়া আহরণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে কাঁকড়ার প্রাপ্যতা দিন দিন কমে যাচ্ছে এবং অন্যান্য জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, কাঁকড়া মোটাতাজাকরণে চাষীরা বিভিন্ন ধরণের মাছ কাঁকড়ার খাবার হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন যা সম্পূরক ও নিয়ন্ত্রিত নয় এবং চাষীরা এর মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত বৃদ্ধিও পাননা।

কাঁকড়া চাষের ক্ষেত্রে এসব সমস্যার সমাধান চিংড়ির মতো হ্যাচারিতে কাঁকড়ার পোনা উৎপাদন ও কাঁকড়া চাষে সম্পূরক খাদ্যের ব্যবহার। এ দুইয়ের সমন্বয় সাধনে ১০০ জন কাঁকড়া চাষীকে নিয়ে সম্পূরক খাদ্য ব্যবহার করে হ্যাচারিতে উৎপাদিত কাঁকড়ার পোনা নার্সিং ও মোটাতাজাকরণের লক্ষ্যে প্রকল্প ‘সম্পূরক খাদ্য ব্যবহার করে হ্যাচারিতে উৎপাদিত শীলা কাঁকড়ার চাষ’ কক্সবাজার এবং সাতক্ষীরা জেলায় চলমান রয়েছে।

মৎস্য অধিদপ্তরের সাসটেইনেবল কোস্টাল মেরিন প্রকল্পের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মৎস্য ও সামুদ্রিক বিজ্ঞান বিভাগ৷ প্রকল্পে প্রধান গবেষক হিসেবে কাজ করছেন বিভাগটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ -আল মামুন। এতে সহযোগী সংস্থা হিসেবে কাজ করছে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সাইন্স বিশ্ববিদ্যালয়, গ্লোব অ্যাগ্রো লিমিটেড ও ইরাওয়াব ট্রেডিং।

উক্ত প্রকল্পের মাধ্যমে বেসরকারি হ্যাচারিতে কাঁকড়ার পোনা উৎপাদন করা হয়। প্রথম পর্যায়ে প্রথম ব্যাচে উৎপাদিত প্রায় ২০ হাজার পোনা কক্সবাজারের ১৩ জন কাঁকড়া চাষীকে সরবরাহ করা হয়। এসব পোনা নার্সিং ও চাষাবাদে নোবিপ্রবি উদ্ভাবিত সম্পূরক খাদ্যও চাষীদের সরবরাহ করা হয়। এর আগে কাঁকড়ার এই সম্পূরক খাদ্য উদ্ভাবন করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক ও গবেষক অধ্যাপক ড. আব্দু্ল্লাহ-আল মামুন। এদিকে শনিবার (১৮ মার্চ) চাষী পর্যায়ে সরবরাহকৃত কাঁকড়ার প্রথম আহরণ উপলক্ষে টেকনাফের মিনাবাজারে মাঠ দিবস কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

প্রকল্পের প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ-আল মামুনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাহবুবুল হক। এছাড়াও বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান। এসময় প্রকল্প সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা অংসিন উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথি মাহবুবুল হক প্রকল্পের অগ্রতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, কাকড়া ব্লু ইকোনোমিতে, উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি গবেষকদের চাষীবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবনে জোর দেয়ার আহ্বান জানান।

প্রকল্পের প্রধান গবেষক ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য ও সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ-আল মামুন বলেন, হ্যাচারীর পোনা ও সম্পূরক খাবার দিয়ে কাঁকড়া উৎপাদন বাংলাদেশের উপকূলীয় মৎস্য চাষে মাইলফলক হয়ে থাকবে। তিনি উদোক্তাদের প্রযুক্তি সম্প্রসারণে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন।

অনুষ্ঠানে শতাধিক মৎস্যচাষী, সুফলভোগী চাষীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন। পরে মহাপরিচালক ও অন্যান্যরা চাষীদের দ্বারা কাঁকড়া আহরণ কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন।

বিএনএ/ শাফি, বিএম

Loading


শিরোনাম বিএনএ