বিএনএ, কক্সবাজার: ভ্রমণ নিষেজ্ঞা উপেক্ষা করে সেন্টমার্টিন জেটিঘাট থেকে ছোট নৌযানে করে পর্যটকেরা ছেঁড়াদিয়ায় যাচ্ছেন। পরিবেশ ও প্রতিবেশ সংকটাপন্ন দ্বীপ সেন্টমার্টিনে এখন ভ্রমণ করছেন দৈনিক চার হাজারের বেশি পর্যটক। তাঁদের অর্ধেকই ৭ কিলোমিটার দক্ষিণের আরেক বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ছেঁড়াদিয়ায় ঘুরতে যাচ্ছেন। যদিও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তা মানছেনা কেউ।
ছেঁড়াদিয়া থেকে আহরণ করা হচ্ছে প্রবাল, শামুক, ঝিনুক। দ্বীপে ভ্রমণ করতে গেলে পর্যটকদের ১৪ দফা বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য কয়েক বছর ধরে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে আসছে পরিবেশ অধিদপ্তর। তবে এর কোনো প্রতিফলন এখানে নেই।
১৪টি বিধিনিষেধের ১০ নম্বরে বলা আছে, সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক অধিগ্রহণকৃত ছেঁড়াদিয়া দ্বীপ ভ্রমণনিষিদ্ধ। ৯ নম্বরে বলা হয়, ছেঁড়াদিয়া দ্বীপে স্পিডবোট, ট্রলার বা অন্যান্য জলযানের যাতায়াত ও নোঙর করা নিষিদ্ধ। আর ১১ নম্বর বিধিতে বলা হয়, দ্বীপের প্রবাল, শামুক, ঝিনুক, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, তারা মাছ, রাজকাঁকড়া, শৈবাল, কেয়া ফল সংগ্রহ ও ক্রয়-বিক্রি নিষিদ্ধ।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, সেন্টমার্টিন জেটি থেকে প্রকাশ্যে ৫০টির বেশি স্পিডবোট, গামবোট ও ট্রলার ছেঁড়াদিয়ায় চলাচল করে। যাতায়াতের বিপরীতে মাথাপিছু স্পিডবোট ভাড়া ৪০০ টাকা, গামবোট ভাড়া ২৫০ ও ট্রলারে ১৫০ টাকা গুনতে হয়। এর বাইরে যাবার সময় পলিথিন শপিং ব্যাগে করে নিয়ে যাচ্ছে প্লাস্টিকের বোতলে করে পানীয়, সিপ্সের প্যাকেটসহ নানা পণ্য। এগুলো খেয়ে-পান করে ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছে ছেঁড়াদিয়ায়। এতে করে পরিবেশ প্রতিবেশের যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনি জলজ প্রাণীবৈচিত্র্যের আবাসস্থল ও নানা ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, যতদিন সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিত করা যাচ্ছে না ততদিন এ সমস্যা লেগেই থাকবে। আইনের প্রতি কারো কোন এতটুকু শ্রদ্ধাবোধ নেই যে,পরিবেশ প্রতিবেশের ক্ষতি করা যে, কত ভয়ানক হতে পারে। আইনমান্য করার প্রবনতা তৈরি না গেলে পরিবেশ দূষণ রোধ করা যাবে না।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে পর্যটকদের সেবা দেয়ার।
কক্সবাজার পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, যতদিন সেন্টমার্টিনে রাত্রি যাপন নিষিদ্ধ করা যাচ্ছে না ততদিন পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড রোধ করা সম্ভব নয়।
বিএনএ/ ফরিদুল, এমএফ