34 C
আবহাওয়া
২:১০ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ১৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » রোহিঙ্গাদের এনআইডি: দুদকের জালে চসিকের সাবেক কাউন্সিলরসহ ৬ জন

রোহিঙ্গাদের এনআইডি: দুদকের জালে চসিকের সাবেক কাউন্সিলরসহ ৬ জন


বিএনএ,চট্টগ্রাম: অবৈধ উপায়ে রোহিঙ্গা নাগরিককে জাতীয় সনদপত্র (এনআইডি) প্রদান এবং পাসপোর্ট আবেদনে সহায়তা করার দায়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) আরেক সাবেক কাউন্সিলরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ নিয়ে এ ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুভাষ চন্দ্র দত্ত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম-২-এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন।

কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত রোহিঙ্গা ডাকাত নুর আলমকে এনআইডি দেওয়ার অভিযোগে চারজনকে আসামি করা হয়েছে। এরা হলেন- চট্টগ্রাম নগরীর সাবেক পাঁচলাইশ থানা নির্বাচন কর্মকর্তা ও বর্তমানে পাবনা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখ, চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সাবেক ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মোহাম্মদ শাহজামাল, পাঁচলাইশ নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রুফ রিডার উৎপল বড়ুয়া ও রন্তু বড়ুয়া।
নুর আলম
এছাড়া নিহত নুর আলমকে জন্মসনদ ও জাতীয়তা সনদ দেওয়ার অভিযোগে দু’জনকে আসামি করা হয়েছে। এরা হলেন- চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর সরফরাজ কাদের চৌধুরী রাসেল, একই ওয়ার্ডের জন্মনিবন্ধন সহকারী ফরহাদ হোসাইন।

চট্টগ্রাম-২-এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন জানান, নুর আলম নামে এক রোহিঙ্গা ডাকাত ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরীর ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হিসেবে এনআইডি কার্ড পান। এনআইডি কার্ড পেতে জন্মনিবন্ধন ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করেন ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সরফরাজ কাদের এবং জন্মনিবন্ধন প্রস্তুতকারী মো. ফরহাদ হোসাইনকে। এছাড়াও এই কাজে তাদের সহযোগিতা করেছেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা এবং তিন কর্মচারি। আসামিরা রোহিঙ্গা নাগরিককে বাংলাদেশের আইডি কার্ড প্রদান করে অবৈধ উপায়ে লাভবান হয়েছেন। তাই তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এনআইডি পেতে নুর আলম তার ঠিকানা চট্টগ্রাম নগরীর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের আমিন জুট মিল কলোনি উল্লেখ করে পাঁচলাইশ থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোবারক আলী ওই ঠিকানায় নুর আলমের অবস্থানের সত্যতা পাওয়া যায়নি মর্মে প্রত্যয়ন করেন। এরপর নুর আলম নিজেকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ঠান্ডাছড়ি গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা উল্লেখ করে আবেদন করেন। কিন্তু রাজানগর ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান সামশুল আলমও ওই ঠিকানায় নুর আলম কখনও অবস্থান করেননি বলে প্রত্যয়ন করেন।পরবর্তীতে নুর আলমকে চট্টগ্রাম নগরীর ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হলিশহর ওয়ার্ড থেকে জন্ম সনদ ও জাতীয় পরিচয় পত্র দেওয়া হয়। তৎকালীন কাউন্সিলর সরফরাজ কাদের চৌধুরী রাসেলের প্রত্যয়নের ভিত্তিতে নুর আলমকে পাঁচলাইশ থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ভোটর তালিকায় নিবন্ধন করা হয় ও পরবর্তীতে স্মার্ট কার্ড দেওয়া হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়, সেসময় পাঁচলাইশ থানা নির্বাচন কর্মকর্তা ছিলেন আব্দুল লতিফ শেখ। নুর আলমকে ভোটার তালিকায় নিবন্ধন ও স্মার্ট কার্ডের জন্য তথ্য সার্ভারে আপলোড এবং পরবর্তীতে স্মার্ট কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোবারক আলী ও রাজানগর ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান সামশুল আলমের প্রত্যয়ন আমলে নেননি। এমনকি তাদের দেওয়া তথ্য সংরক্ষণও করেননি। রোহিঙ্গা নুর আলমকে ভোটার তালিকাভুক্ত করে জাতীয় পরিচয় পত্র (স্মার্ট কার্ড) সরবরাহের জন্য দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।

বিএনএনিউজ/মনির

Loading


শিরোনাম বিএনএ