34 C
আবহাওয়া
১২:১৯ অপরাহ্ণ - মে ১৭, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ৫৫ কোটি টাকায় মুক্ত ‘এমভি আব্দুল্লাহ’!

৫৫ কোটি টাকায় মুক্ত ‘এমভি আব্দুল্লাহ’!


বিএনএ, ডেস্ক :  অবশেষে জিম্মি হওয়ার ৩১ দিনের মধ্যে সোমালিয়ার উপকূলে জিম্মি ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ মুক্তি পেয়েছে। মালিকপক্ষ কত ডলার দিয়ে জাহাজ ও নাবিকদের ছাড়িয়েছে তা গণমাধ্যমে প্রকাশ করা থেকে বিরত রয়েছে। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্স দুজন জলদস্যুর বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, এমভি আব্দুল্লাহ ও ২৩ নাবিককে ছাড়িয়ে আনতে জলদস্যুদের ৫০ লাখ ডলার মুক্তিপণ দেওয়া হয়েছে। যা বাংলাদেশি টাকায় ৫৫ কোটি টাকা!

YouTube player

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, জলদস্যুদের একজন আবদিরশিদ ইউসুফ বলেছেন, ‘দুই রাত আগেই আমাদের কাছে ডলার আনা হয়…। আমরা যাচাই করে দেখেছি, ডলারগুলো আসল না জাল। তারপর আমরা ডলারগুলো কয়েকটি দলের মধ্যে ভাগ করে সরকারি বাহিনীকে এড়িয়ে জাহাজ ত্যাগ করি।’ সব নাবিকসহ জাহাজটিকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে জানান আবদিরশিদ ইউসুফ।

এ দিকে সোমালিয়ার সংবাদমাধ্যম পান্টল্যান্ড পুলিশ ফোর্সের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ‘গারো অনলাইন’ জানিয়েছেন,, উত্তর-পূর্ব সোমালিয়ার পান্টল্যান্ড রাজ্যের পূর্ব উপকূল থেকে অন্তত আট জলদস্যুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছিনতাই হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ ছেড়ে দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমালিয়ার সংবাদমাধ্যম ডেইলি সোমালিয়া অনলাইনের এক্স বার্তায় এবং পান্টল্যান্ড মিররের এক্স বার্তায় স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়, পাঁচ মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ নেওয়ার পর জলদস্যুরা জাহাজটি ছেড়ে দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১২ ই মার্চ মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাওয়ার পথে ছিনতাইয়ের শিকার হয় বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। জিম্মি করা হয় এর ২৩ নাবিককেও। সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু থেকে প্রায় ৬০০ নটিক্যাল মাইল পূর্বে ঘটে এই ছিনতাইয়ের ঘটনা। ভারত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের যুদ্ধজাহাজ বাংলাদেশি জাহাজটির পিছু নিলেও সেটি জলদস্যুদের কবল থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ছিনতাইয়ের ৯ দিনের মাথায় জলদস্যুরা প্রথম মালিকপক্ষের কাছে মুক্তিপণের দাবি জানায়। এরপর শুরু হয় দর-কষাকষি।

এর আগে ২০১০ সালে ছিনতাই হওয়া একই কোম্পানির জাহাজ এমভি জাহান মণি ১০০ দিনের মাথায় ছেড়ে দেয় জলদস্যুরা। সে সময় সোমালিয়া রিপোর্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, জাহাজটি মুক্ত করতে চার মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছিলো মালিকপক্ষ। এমভি জাহান মণি জাহাজের মুক্তিপণের অর্থ পরিশোধের বিষয়টি এখনো স্বীকার করেনি মালিকপক্ষ।

জাহান মণি জাহাজের ক্ষেত্রে ডলারভর্তি দুটি ব্যাগ উড়োজাহাজ থেকে ফেলা হয়েছিল। এমভি আবদুল্লাহর ক্ষেত্রে ব্যাগ ছিল তিনটি। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সমঝোতার প্রক্রিয়ায় থাকা একজন কর্মকর্তা জানান, পাঁচ মিলিয়ন ডলারের মুক্তিপণের বিষয়টি সঠিক নয়। এমভি জাহান মণির চেয়ে অনেক কম মুক্তিপণে জাহাজটি ছেড়ে দিয়েছে জলদস্যুরা। যদিও আরেক কর্মকর্তা জানান, জাহাজটি ছাড়িয়ে আনতে মুক্তিপণসহ সব মিলিয়ে জাহান মণির চেয়ে অনেক বেশি অর্থ খরচ হয়েছে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, মুক্তিপণ কত, তা মিলিয়ন ডলার কোয়েশ্চেন। সমঝোতার শর্ত অনুযায়ী বিমা কোম্পানি বা মালিকপক্ষ এটি কখনোই স্বীকার করবে না।
শনিবার মুক্তি পাওয়ার পর জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারমিয়া বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যায়।

শনিবার সন্ধ্যার আগে উড়োজাহাজ থেকে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর পাশে তিনটি ব্যাগ ফেলা হয়। ডলারভর্তি এসব ব্যাগ পাওয়ার আট ঘণ্টা পর, অর্থাৎ বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত রাত ৩টা ৮ মিনিটে জাহাজটি থেকে দস্যুরা নেমে যায়। এই তিন ব্যাগে কত ডলার ছিল, তা–ই নিয়ে এখন আলোচনা চলছে।

মুক্তিপণের অঙ্ক কত, তা জানে তিনটি পক্ষ। এক. সোমালিয়ার জলদস্যুরা, যারা জাহাজটি জিম্মি করেছিল। দুই. মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপ এবং তিন. লন্ডনভিত্তিক জাহাজের বিমা কোম্পানি। এই তিন পক্ষের মধ্যে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। মালিকপক্ষ বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কোনো কথা বলতে নারাজ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম গত রোববার দুপুরে চট্টগ্রামের শেখ মুজিব রোডস্থ কেএসআরএম কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেনিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সোমালিয়ার আইন অনুয়ায়ী জাহাজটি সমঝোতার সব প্রক্রিয়া বৈধভাবে হয়েছে। সমঝোতার শর্ত অনুযায়ী অনেক বিষয় প্রকাশ করতে পারব না আমরা।’

বিএনএ/ শামীমা চৌধুরী শাম্মী/হাসনা

Loading


শিরোনাম বিএনএ