24 C
আবহাওয়া
৩:৫৪ পূর্বাহ্ণ - মে ৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » আল্লাহর কাছে রোজাদারের মর্যাদা

আল্লাহর কাছে রোজাদারের মর্যাদা

রোজা

ধর্ম ডেস্ক: রমজানের রোজা ইসলামের অন্যতম রোকন এবং ফরজ ইবাদত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘হে ঈমানদাররা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর; যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বনকারী হতে পারো।’ (সুরা বাকারা: ১৮৩)

মুমিনের খুশির মাস
রমজান হলো মুমিনের আনন্দের মাস। রোজাদার যখন আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন, তখন তাঁর আনন্দের সীমা থাকবে না। তাকে আনন্দের একটি মুহূর্ত দুনিয়াতেই দেওয়া হয়েছে। এসম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘সিয়াম পালনকারীর জন্য দুটো বিশেষ আনন্দ-মুহূর্ত রয়েছে : একটি ইফতারের সময়, আর দ্বিতীয়টি হলো তার রবের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়। (বুখারি: ৭৪৯২; মুসলিম: ১১৫১)

রোজাদারের জন্য বিশেষ পুরস্কার ঘোষণা
প্রতিটি নেক আমলের পুরস্কার আছে। তবে রোজাদারের জন্য আল্লাহ বিশেষ পুরস্কার রেখেছেন। হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘মানুষের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্য, কিন্তু রোজা এর ব্যতিক্রম। রোজা শুধু আমার জন্য, আমিই এর প্রতিদান দেব।’ (মুসলিম: ২৭৬০)

অতীতের গুনাহ মাফ
রমজানের বিধান যথাযথ আদায়ের কারণে রোজাদারের অতীতের সকল গুনাহ ক্ষমা হয়ে যায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি রমজানে ঈমানের সাথে ও সওয়াবলাভের আশায় রমজানের রোজা পালন করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয় এবং যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে, সওয়াবলাভের আশায় লাইলাতুল কদরে রাত জেগে দাঁড়িয়ে সালাত (নামাজ) আদায় করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয়।’

জাহান্নাম থেকে মুক্তি
হাদিস শরিফে এসেছে, রোজাদারদের জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয়, তাদের দোয়া কবুল করা হয়। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ তাআলা রমজান মাসের প্রতিদিন ও রাতে অসংখ্য ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন এবং প্রত্যেক মুমিন বান্দার একটি করে দোয়া কবুল করেন।’ (মুসনাদে আহমদ: ৭৪৫০; মুসনাদে বাজ্জার: ৯৬২)
রাসুলুল্লাহ (স.) আরও বলেছেন, ‘যে কেউ আল্লাহর রাস্তায় (অর্থাৎ শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশি করার জন্য) একদিন সিয়াম পালন করবে, আল্লাহ তাকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে ৭০ বছরের রাস্তা পরিমাণ দূরবর্তীস্থানে রাখবেন।’ (বুখারি: ২৮৪০; মুসলিম: ১১৫৩)

রোজা ঢালস্বরূপ
রোজা হলো জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষার ঢালস্বরূপ। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘সিয়াম ঢাল স্বরূপ। এ দ্বারা বান্দা নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করতে পারো’ (আহমদ: ১৫২৯৯)। অন্য হাদিসে এসেছে,‘সিয়াম ঢালস্বরূপ এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচার এক মজবুত দুর্গ।’ (আহমদ : ৯২২৫)

রোজাদারের মুখের ঘ্রাণও আল্লাহ পছন্দ করেন
যারা রোজা রাখে, আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। নিচের হাদিসে সেই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। নবীজি (স.) বলেন, ‘সেই মহান সত্তার শপথ! যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ, অবশ্যই রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিসকের ঘ্রাণের চেয়েও উত্তম।’ (সহিহ বুখারি: ১৯০৪)

জান্নাত লাভের হাতিয়ার
আবু উমামা (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে এমন একটি আমল বলে দিন, যার কারণে আমি জান্নাতে যেতে পারি। তিনি বললেন, ‘তুমি সিয়াম পালন করো। কেননা এর চেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন কোনো ইবাদত নেই।’ (নাসায়ি: ২২২১)

রোজাদারের সম্মানে শয়তানকে শেকলবন্দি করা হয়
শয়তানের হয়রানি থেকে মুক্ত থাকেন একজন রোজাদার। কারণ, রোজা শুরু হওয়ার সময় শয়তানকে শেকলবন্দি করা হয়। একইসঙ্গে জাহান্নামের দরজা বন্ধ করা হয় এবং খুলে দেওয়া হয় জান্নাতের সকল দরজা।

মহানবী (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘রমজান মাসের প্রথম রজনীতে শয়তানদের মজবুতভাবে বেঁধে রাখা হয় এবং অবাধ্য জ্বিনদেরও বন্দি করে রাখা হয়। দোজখের সব দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কোনো দরজা পুরো রমজান মাসে খোলা হয় না এবং জান্নাতের সব দরজা খুলে দেওয়া হয়। একটি দরজাও বন্ধ করা হয় না। সঙ্গে সঙ্গে একজন আহ্বানকারী আহ্বান করতে থাকেন—হে সওয়াবপ্রত্যাশী! অগ্রসর হও। হে পাপিষ্ঠ! পাপ থেকে হাত গুটিয়ে নাও। আল্লাহ তাআলা এই পবিত্র মাসের সম্মানার্থে অনেক পাপিষ্ঠকে ক্ষমা করে দেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। আর এটি রমজানে প্রতি রাতেই হয়ে থাকে।’(বায়হাকি, শুআবুল ইমান: ৩৫৯৭-৯৮)

রাইয়ান নামে জান্নাতে বিশেষ দরজা
রোজাদাররা আল্লাহ তাআলার কাছে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘জান্নাতে রাইয়ান নামক বিশেষ দরজা দিয়ে শুধুমাত্র রোজাদাররাই প্রবেশ করবে। অন্য কেউ সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (বুখারি: ১৮৯৬; মুসলিম: ১১৫২)

রোজা কেয়ামতের দিন সুপারিশ করবে
রোজা ও কোরআন কেয়ামতের দিন মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে, রোজা বলবে- হে আমার রব, আমি দিনের বেলায় তাকে (এ রোজা পালনকারীকে) পানাহার ও যৌনতা থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল করো। অনুরূপভাবে কোরআন বলবে, হে আমার রব, আমাকে অধ্যয়নরত থাকায় রাতের ঘুম থেকে আমি তাকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল করো। তিনি (স.) বলেন, অতঃপর উভয়ের সুপারিশই কবুল করা হবে। (আহমদ: ২/১৭৪)

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে এ মর্যাদার অংশীদার করুন। আমিন।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ