বিএনএ, রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ১৮৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ফুয়াদ আল খতিবের মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে মরদেহ উদ্ধার করার সময় তার শরীরে কিছু জায়গায় লাল দাগ দেখা গেছে।
ফুয়াদের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে গতকাল গঠন করা হয়েছে চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। দশ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে বিয়টি নিশ্চিত করেন শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ একরামুল ইসলাম।
হলের আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবিরকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আবাসিক শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম, ড. মো. ইসমাইল হোসেন এবং কে. এম. মনিরুল ইসলাম।
এ বিষয়ে শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ একরামুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআই তদন্ত করছে। পাশাপাশি হল কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটিও কাজ করছে। আমরা আশা করছি খুব দ্রুতই এই ঘটনার কারণ জানা যাবে।
তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে আবাসিক শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম বলেন, “আমাদের দশ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে এখনো বসিনি। আগামীকালকের মধ্যেই আমরা আমাদের তদন্তের কার্যক্রম শুরু করব।”
এদিকে ফুয়াদের সহপাঠীদের সূত্রে জানা যায়, মারা যাওয়ার আগের দিন তিনি নিজ বাড়ি থেকে হলে ফিরেন। গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে ফুয়াদ গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন। বাড়ি থেকে এসে সেদিন রাতের খাওয়া শেষে মশারি টাঙিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সিঙ্গেল রুম হওয়ায় এবং রাতে জার্নি করায় সকালে তাকে কেউ ডাকতে যায়নি।
সারাদিন চলে যাওয়ায় তার বন্ধুরা রুমে গিয়ে দেখেন ফুয়াদ শুয়ে আছে। নাড়া দিতেই তার মুখ দিয়ে লালা পড়ছিল এবং পুরো শরীর কালো হয়ে গেছিল। এ অবস্থা দেখেই তার বন্ধুরা বুঝতে পারছিলেন তিনি মারা গেছেন। পরবর্তীতে তার নিথর দেহ উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তার সহপাঠীরা। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও ফুয়াদের বন্ধু কামরুল হাসান অভি বলেন, “ফুয়াদ অত্যন্ত নম্র-ভদ্র ছিল। কী কারণে ফুয়াদ মারা গেছে এ বিষয়ে আমরা জানি না। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ তারা যেন সঠিক তদন্ত করে ফুয়াদের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করেন।”
ফুয়াদের বাবা আমিনুল ইসলাম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার ভবিষ্যৎ শেষ। পরিবারের তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সে ছিল অত্যন্ত বিনয়ী ও মেধাবী। কী কারণে ফুয়াদ মারা গেলো সে বিষয়ে আমরা জানতে চাই।পরিবারের সবার আশা ছিল সে ভালো কিছু করবে। তার আকস্মিক এ মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।”
বিএনএ/সাকিব, এমএফ