34 C
আবহাওয়া
১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ - মে ৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » বাবার কাটা মাথা পতেঙ্গা সৈকতে ফেলেছি: শফিকুরের জবানবন্দি

বাবার কাটা মাথা পতেঙ্গা সৈকতে ফেলেছি: শফিকুরের জবানবন্দি

বাবার কাটা মাথা পতেঙ্গা সৈকতে ফেলেছি শফিকুরের জবানবন্দি

বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেডে হাসান আলীকে হত্যার পর কেটে টুকরো করার মামলায় তার ছেলে শফিকুর রহমান জাহাঙ্গীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালতে এ জবানবন্দি নেওয়া হয়।

এর আগে, গত ৩ অক্টোবর একই আদালতে জাহাঙ্গীরের স্ত্রী আনারকলিও জবানবন্দি দিয়েছে। এরও আগে, আদালতে হাসানের বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খান বলেন, গত শুক্রবার হাসান আলী হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত তার ছেলেকে ঢাকার হাজারীবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন শনিবার আদালতে হাজির করলে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। মঙ্গলবার জাহাঙ্গীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে শফিকুর রহমান জাহাঙ্গীর জানায়, ছোটবেলা থেকে তার বাবাকে দেখেনি। প্রায় ২৭ বছর তার বাবা নিরুদ্দেশ ছিলেন। এ সময় বড় ভাই ও মা তাকে দেখাশুনা করতেন। গত দেড় বছর আগে তার বাবা হঠাৎ ফিরে আসেন। বাবা ফিরে তার চাচার যোগসাজশে তাদের সম্পদ বঞ্চিত করার চেষ্টায় ছিলেন। বাবা মাকে কুফরি তাবিজ করে। এতে মা অসুস্থ হয়ে যায়। ঘটনার এক মাস আগে মা আমার বাসায় আসেন। এর আগে গত রোজায় আব্বা আমাকে বলেছিলেন উনার কোনো ছেলে নেই। এই কারণে আমি বাবার ওপর এমনিতেই ক্ষিপ্ত ছিলাম। ঘটনার একদিন আগে বাবা আমার ইপিজেড আকমল আলী সড়কের বাসায় আসেন। পরদিন নানা বিষয়ে কথাবার্তার একপর্যায়ে আমি বাবাকে রশি দিয়ে মুখ-হাত বেঁধে বাসা থেকে বের হয়ে যাই।

কয়েকঘণ্টা পর ফিরে আসলে বড় ভাই জানান তিনি বাবাকে মেরে ফেলেছেন। এরপর বাবার মরদেহ বস্তাসহ আমার রুমে নিয়ে আসি। আমার বউকে দিয়ে ধামাসহ অন্যান্য সরঞ্জাম আনাই। বড় ভাই বাবার মরদেহ বাথরুমে ঢুকিয়ে ১০ টুকরো করে। এ সময় আমি বাসার বাইরে পাহারা দিই। এরপর মরদেহের একটি অংশ একটি টোকাই ছেলেকে দিয়ে আকমল আলী খালে ফেলে দিয়েছি। তাকে পাঁচশত টাকা দেই। বাকি অংশ লাগেজে ভরে বড় ভাই পতেঙ্গা থানার ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় ফেলে দেন। আমি এবং স্ত্রী মিলে বাবার কাটা মাথা পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে ফেলে দিই।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে নগরের ইপিজেড থানার আকমল আলী সড়ক এলাকায় একটি বস্তা থেকে তার শরীরের অবশিষ্ট অংশও উদ্ধার করা হয়। হাসান আলীর মরদেহের আঙুলের ছাপ নিয়ে তার পরিচয় শনাক্ত করে পিবিআই। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম, ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান ও শফিকুর রহমান জাহাঙ্গীরের স্ত্রী আনারকলিকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে লাগেজের ভেতর থেকে মরদেহের হাত-পা ও আঙুলের ৮ টুকরা খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করে পতেঙ্গা থানা পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেছিল। ঘটনা তদন্তে কাজ শুরু করে পিবিআই।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে যুবলীগ নেতা হত্যা: আরও দুই আসামি গ্রেপ্তার

পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, মো. হাসান দীর্ঘ ২৭ বছর আলাদা ছিলেন। সম্প্রতি তিনি স্ত্রী-সন্তানের কাছে ফিরে আসেন। তবে এর আগে হাসানকে মৃত উল্লেখ করে সন্তান মোস্তাফিজুর জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে। তিনি ফিরে আসায় সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জেরে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে ইপিজেড থানার আকমল আলী সড়কের জমির ভিলার ৭ নম্বর বাসায় স্ত্রী ও সন্তান মিলে তাকে হত্যা করে। এরপর মরদেহ কেটে টুকরো করে লাগেজ ও বস্তায় ভরে পতেঙ্গা সৈকত ও আকমল আলী সড়কের পাশে ফেলে দেওয়া হয়।

বিএনএনিউজ/বিএম

Loading


শিরোনাম বিএনএ