বিএনএ,চবি: হঠাৎ করেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা বেড়েছে। প্রতিদিনই একাধিক ট্রেনে শিক্ষার্থীরা আহত হচ্ছেন। শনিবার (৯ এপ্রিল) পাথর নিক্ষেপ রোধে প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করলেও সেটিকে ‘নামকাওয়াস্তে’ বলছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, চট্টগ্রাম শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আপডাউনের ক্ষেত্রে একাধিক স্থানে পাথর নিক্ষেপের শিকার হচ্ছেন তারা। এর মধ্যে ঝাউতলা স্টেশন পরবর্তী বস্তি ও ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বেশি ঘটছে এ ঘটনা। এতে প্রতিদিনই অনেকেই আহত হচ্ছেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, অভিযানের পরও শনিবার বিকেলে এক ছাত্র আহত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছেড়ে যাওয়া ৪.২০টার ট্রেন নগরীর উদ্দেশে ছেড়ে গেলে ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন সংলগ্ন শান্তি কলোনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র পুনম বড়ুয়ার নাক ও ঠোঁট কেটে যায়।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল রাতে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী আহত হন। আগের দিন ৭ এপ্রিলও এক শিক্ষার্থী আহত হন পাথরের আঘাতে। ৬ এপ্রিলও পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। যদিও তাতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে পাথর নিক্ষেপ রোধে শনিবার অভিযান পরিচালনা করে প্রক্টরিয়াল বডি। এ সময় শাটল থেকে বহিরাগত ও টোকাইদের বের করে দেওয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, পাথর নিক্ষেপ করা হচ্ছে বাইরে থেকে। ট্রেনের ভিতরে কিসের অভিযান?
বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাইফুর রহমান বিএনএ নিউজকে বলেন, চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ জরিমানার বিধান আছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শাটল ট্রেন থেকে টোকাইদের বের করেই দায় সারছেন। এতগুলো শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। শাস্তি না দিলে এগুলো থামবে না। অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা দরকার।
উল্লেখ্য, রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারা অনুযায়ী, ট্রেনে পাথর ছোড়া হলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান আছে। ৩০২ ধারা অনুযায়ী, পাথর নিক্ষেপে কারও মৃত্যু হলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। যদিও এসব আইনে কারও শাস্তির কোনো নজির নেই।
এদিকে শনিবার পাথর নিক্ষেপে শিক্ষার্থী আহত হওয়ার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অরুপ বড়ুয়া। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আজকে থেকে বহিরাগত সমস্যা ও পাথর নিক্ষেপের ঘটনা নিয়ে অভিযান শুরু করেছি, এটা চলমান থাকবে। মাত্র তো শুরু করছি, তাই আজকেও তারা পাথর নিক্ষেপের সুযোগ পেয়েছে। আমরা সাথে সাথে ট্রেন থামিয়ে ওই স্থানে নেমে স্থানীয় লোকদের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘মহানগর পুলিশ প্রশাসন আমাদের সাথে আছে। আমরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই বিষয়টি সমাধান করব।’
বিএনএ/এনএআর,ওজি