বিএনএ, ঢাকা: ৫ বছর আগে এভাবে প্রকাশ্যে মহানবী হয়রত মুহাম্মদ (স:) এর স্ত্রী খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ সর্ম্পকে মন্তব্য করে কোটি কোটি মুসলমানের সমালোচনার শিকার হন ইসলামিক বক্তা খ্যাত মিজানুর রহমান আজহারী। সমালোচনার ঝড় এতটা তীব্র হয়ে উঠেছিল যে, তার পক্ষে তা সামাল দেওয়া সম্ভব ছিল না। এক পর্যায়ে আজহারী তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ১২ জন ভারতীয় হিন্দু অবৈধ ভিসায় বাংলাদেশে এসে তার হাতে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম হলে, তিনি বেশ সমালোচিত হন। দেশবিরোধী বক্তব্যের অভিযোগ এনে বিভিন্ন স্থানে তার মাহফিল এক ও একাধিকবার নিষিদ্ধ করা হয়। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে এক সংসদ সদস্য কর্তৃক তাকে দেশবিরোধী মন্তব্য প্রদানকারী বলে দাবি করা হয়। একই সময়ে ‘‘ঘরে ঘরে সাঈদীর জন্ম হোক’’ বলে মন্তব্য করায় বাংলাদেশের সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ তাকে “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রোডাক্ট” বলে অভিহিত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন।
এই অবস্থায় মিজানুর রহমান আজহারী ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি ফেসবুকে এক পোস্টে পিএইচডি গবেষণার জন্য মালেশিয়ায় পাড়ি জমান বলে উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের পট পরিবর্তনের পর আজহারী সাড়ে চার বছর পর গত বছরের ২ অক্টোবর দেশে ফিরে আসেন এবং বিভিন্ন মাহফিলে গণ আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
তারই ধারাবাহিকতায় গত ৩ জানুয়ারি যশোহরে এক তাফসির মাহফিলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের লুটপাটের চিত্র তুলে ধরে বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘একদল খাইছে, আরেকদল খাওয়ার জন্য রেডি হয়ে আছে’।
আজহারীর এমন বক্তব্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে রাজনৈতিক অঙ্গনে। বিএনপি নেতারা মিজানুর রহমান আজহারীকে জামায়াতে ইসলামীর নেতা হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন, সারাদেশে তাফসিরুল মাহফিলের নামে জামায়াতে ইসলামীর দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে করে যাচ্ছেন আজহারি। বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির অন্যতম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন আজহারীর বক্তব্যের কড়া জবাব দেন।
ইংরেজি, বাংলা ও আরবির মিশেল ভাষার বক্তা আজহারীর তাফসির মাহফিলে উপস্থিত হওয়া বেশিরভাগ মানুষই জামায়াতে ইসলামীর অনুসারি। দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর উদাহরণ দেওয়াসহ নানা বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে অনেক আগে থেকে সমালোচনা ছিল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক দীর্ঘ সময়ের। এক সঙ্গে জোট বেধে আন্দোলন ও নির্বাচন সবই তারা করেছে। বিএনপি ও জামায়াত জোট একবার সরকারও গঠন করেছে। সেই সরকারে জামায়াতের নেতারা মন্ত্রীও হয়েছে। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় তারা এখন দুই ভুবনের বাসিন্দা হতে চলেছে।
বিএনএনিউজ/ শামীমা চৌধুরী শাম্মী/ বিএম/এইচমুন্নী