24 C
আবহাওয়া
৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ - মার্চ ২৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » উখিয়া কলেজে বিজ্ঞানে সবাই অকৃতকার্য

উখিয়া কলেজে বিজ্ঞানে সবাই অকৃতকার্য


বিএনএ, কক্সবাজার : এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে কক্সবাজারের উখিয়া কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে কোনো শিক্ষার্থী পাশ করতে পারেনি। ৬ জন শিক্ষার্থীর সবাই ফেল করেছে। অথচ সেই বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষকও আছেন ৬ জন।

বুধবার  (৮ ফেব্রুয়ারি) ঘোষিত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা (এইচএসসি) ফলাফলে জেলার  উখিয়া  কলেজে মারাত্মক  বিপর্যয় ঘটেছে। কলেজের ৫৭০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে মাত্র ১৭২ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র একজন। পাশের হার ৩০.২৯ শতাংশ।

রোহিঙ্গা এনজিওতে চাকরির কারণেই শিক্ষার্থীরা কলেজে অনুপস্থিতসহ লেখাপড়ার প্রতি অমনোযোগী  হয়ে পড়েছে বলে বলছেন শিক্ষকরা ।

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত সীমান্তের উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্টানটির ফলাফল বিপর্যয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নানাজন নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে যাচ্ছেন।

অনেকেই বলছেন, কেবল রোহিঙ্গা এনজিওতে চাকরির অজুহাত দিয়ে পার পাওয়া যাবেনা। অন্যান্য কলেজগুলোতে দারুণ ফলাফল করা গেলে উখিয়া কি দোষ করল ? ১৯৯১ সালে স্থাপিত সীমান্তবর্তী এলাকার সবচেয়ে বড় শিক্ষা প্রতিষ্টানটিতে অনার্সেরও ৭টি বিষয় রয়েছে। কলেজে বর্তমানে শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার । শিক্ষক রয়েছেন ৪৬ জন। এরকম ফলাফল বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটছে গত ৪/৫ বছর ধরে। তারপরেও কলেজটির পরিচালনা পরিষদ, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা ফিরছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

উখিয়ার নুর মোহাম্মদ সিকদার ও সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম নামের দুই  ব্যক্তি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জানিয়েছেন, তারা কলেজের ইন্টারের কোন শিক্ষার্থীকে এনজিওতে চাকরি না দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু কেউ কর্ণপাত করেননি তাতে । রোহিঙ্গাদের সেবা দিতে গিয়ে আমাদের ছেলে-মেয়েরা শিক্ষা হারাচ্ছে অথচ রোহিঙ্গারাই উল্টো বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানে পড়ালেখা করে চাকরির বাজার দখল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন বুমেরাং কাজটি রোহিঙ্গারা এবং এনজিওগুলো অনুধাবন করতে পারলেও আমরা স্থানীয়রা উপলদ্ধি করছি না।

এবিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অজিত কুমার দাশ  জানান, শিক্ষার্থীরা কলেজে আসেনা। তাদের ভর্তি  ও পরীক্ষার সময় দেখা যায়, এরপর থেকে অনুপস্থিত থাকে। শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই রোহিঙ্গা শিবিরে এনজিওতে চাকরি করে। অভিভাবক সমাবেশ ডাকলে ৪ হাজারের মধ্যে ৩- ৪ জন আসেন।

তিনি বলেন, এভাবে ফলাফল বিপর্যয় হবে তা কল্পনাতেও ছিল না। বিজ্ঞান বিভাগে ৬ জন শিক্ষক আছেন এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যাও ৬ জন। তবুও একজন শিক্ষার্থীও  পাশ না করার বিষয়টি বেদনাদায়ক।

তবে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে উল্টো অভিযোগ করে বলেছেন, শিক্ষকগণ ক্লাসতো দূরের কথা ব্যবহারিক (প্র্যাকটিক্যাল) ক্লাসও করাননি।

কলেজ পরিচালনা পরিষদের  সদস্য ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা ঢলের পর থেকে কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজ বাদ দিয়ে এনজিওমুখি হওয়ায় ফলাফল এরকম বিপর্যয় হতে শুরু করেছে।

ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক তহিদুল আলম  বলেন-রোহিঙ্গা শিবিরে কর্মরত এনজিওগুলোতে কলেজের শিক্ষার্থীরা চাকরি করে। একারণে  লেখাপড়ার প্রতি বিমুখ হয়ে গেছে তারা। গত ৩ ফেব্রুয়ারি আমার বিভাগের ১৫০ জন শিক্ষার্থীর প্রথম দিনের ক্লাসে মামুন নামের একজন ছাত্র উপস্থিত ছিলেন।

বিএনএনিউজ/এইচ.এম।

Loading


শিরোনাম বিএনএ