বিএনএ ডেস্ক: ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করতে আইনজীবী ইউসুফ আলী ও গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা গুজব ছড়ান। বলেন ‘বাংলাদেশ হবে শ্রীলঙ্কা, আর দেশের রাষ্ট্রপতি অথবা প্রধানমন্ত্রী হবেন ড. ইউনূস।
বুধবার (৬ জুলাই) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি দাবি করেন, গ্রামীণ টেলিকম কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরোজ মাহমুদ হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
হারুন অর রশীদ বলেন, তারা গুজব ছড়ান কিছুদিন পর বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো হয়ে যাবে। তখন ড. ইউনূস হবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। তারা তখন দেশেই থাকতে পারবেন না। অতএব যে টাকাটা আনা হয়েছে সেটি নিয়ে স্বাক্ষর করার চাপ দেয় শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
হারুন অর রশীদ বলেন, একটি অসম চুক্তির মাধ্যমে ইউনিয়নের নেতারা শ্রমিকদের অর্থনৈতিক প্রলোভন এবং ভয় দেখিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এর মাধ্যমে তারা গোপনে যেভাবে টাকা নিয়েছেন। তারা এ টাকা নিতে পারেন না। এর ফলে তারা চুক্তি ভঙ্গ করেছেন। বলেন, ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে ইউনিয়নের নেতারা প্রতারণা করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেন। এখানে তিনজন ব্যক্তি জড়িত ছিলেন।
হারুন অর রশীদ বলেন, শ্রমিক ইউনিয়নের তিন নেতার অ্যাকাউন্টে ৩ কোটি টাকা করে ৯ কোটি টাকা চলে যায়। এককভাবে আইনজীবীদের কাছে চলে যায় ১৬ কোটি টাকা। এরাই মূলত যোগসাজশ করে ইউনিয়নের অন্য নেতাদের এবং শ্রমিকদের বুঝিয়েছেন যে, ‘তোমরা যদি এখানে স্বাক্ষর না কর, তাহলে দেখা যাবে একসময় তোমরা সেই টাকাটাই পাবে না।’
হারুন অর রশীদ বলেন, এই ঘটনার পরে শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক আখতারুজ্জামান রাজধানীর মিরপুর থানায় অর্থ আত্মসাতের মামলা করেন। সেই মামলায় মঙ্গলবার (৫ জুলাই) ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এ ঘটনায় আর কারা জড়িত আছেন, রিমান্ডে তা বের হয়ে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করায় ২০১৬ সালে প্রথম মামলা করেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ১৪ কর্মী। পরে পাওনা চেয়ে ৯৩টি মামলা করেন গ্রামীণ টেলিকমের বর্তমান ও সাবেক কর্মীরা। ঢাকার শ্রম আদালতসহ সব মিলিয়ে ১৯০টি মামলা করা হয়।
গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন চেয়ে প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। চাকরিচ্যুত ১৫৭ কর্মচারীর পাওনা ৪৩৭ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে বলে জানান কর্মচারীদের আইনজীবী ইউসুফ আলী। তবে হঠাৎ করেই বকেয়া পাওনা দাবিকারীরা সব মামলা প্রত্যাহার করে নেন।
বিএনএ/ এ আর