27 C
আবহাওয়া
৮:২২ পূর্বাহ্ণ - মে ১৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » সুন্দরবনে ‘ধিকিধিকি’ জ্বলছে আগুন

সুন্দরবনে ‘ধিকিধিকি’ জ্বলছে আগুন

সুন্দরবন

বিএনএ ডেস্ক: সুন্দরবনের গহিনে ধিকিধিকি জ্বলছে আগুন। ফায়ার সার্ভিস, বন বিভাগ, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের পাশাপাশি গতকাল রোববার সকালে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড। দুপুরে যোগ দেয় বিমানবাহিনী। হেলিকপ্টার নিয়ে পানি ছিটায় তারা। ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগ বলছে, আগুন সম্পূর্ণ না নিভলেও নিয়ন্ত্রণে। নতুন করে আগুন ছড়িয়ে পড়ার তেমন শঙ্কা নেই।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, প্রায় আড়াই কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়েছিল আগুন। বন অধিদপ্তর বলেছে, প্রায় ৫ একর ভূমির গাছপালা ও লতাগুল্ম পুড়েছে। তবে স্থানীয়দের দাবি, পুড়েছে পাঁচ কিলোমিটার জুড়ে বন। বিভিন্ন স্থানে এখনও ধোঁয়া উঠতে দেখা যাচ্ছে।

গতকাল বিকেল ৫টার দিকে এদিনের মতো আগুন নির্বাপণের কাজ সমাপ্ত ঘোষণা করে বিভিন্ন সংস্থা। আজ ভোরে আবার কাজ শুরু হবে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, সেনাবাহিনীও এতে যোগ দেবে।

গত শনিবার সুন্দরবন-পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধারা স্টেশনের আমরবুনিয়া টহল ফাঁড়ির লতিফের ছিলা এলাকায় আগুন নজরে আসে সবার। এর পর আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন বন বিভাগের কর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এলেও এদিন তারা কাজ শুরু করতে পারেননি।

আগুনে বনের গাছপালা, লতাগুল্ম পুড়ে ছাই হয়েছে। ওই এলাকায় মূলত বলা, সুন্দরী, বাইন, গেওয়া, জিন, সিংড়াসহ বিভিন্ন ধরনের গুল্ম জাতীয় গাছ রয়েছে। পুড়ে যাওয়া ভূমিতে এখন ছাইয়ের পুরু স্তর। সেখানে ধোঁয়া আর তাপে শ্বাস নেওয়া কষ্টকর। তাপে আশপাশের গাছের সবুজ পাতা শুকিয়ে গেছে। ছাইয়ের ওপর নতুন করে পড়ছে শুকনো পাতা।

আগুন লাগার খবর পাওয়ার পর শনিবার বিকেলে বনে প্রবেশের সময় বানর, গুইসাপ, বনমোরগসহ বিভিন্ন প্রাণী দেখা গেছে। পাশাপাশি শোনা যাচ্ছিল নানা রকম পাখির ডাক। তবে রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তেমন কোনো প্রাণী বা পাখির ডাক শুনতে পাওয়া যায়নি সেখানে।

বন বিভাগের কর্মকর্তারা ছাড়াও গতকাল সেখানে আসেন উপজেলা প্রশাসন, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধি। এদিকে সুন্দরবনের আগুন মানবসৃষ্ট ও পরিকল্পিত বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। গতকাল সকালে আমরবুনিয়া টহল ফাঁড়ির সামনে মানববন্ধন করেছে বাপা, সুন্দরবন রক্ষায় আমরা ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার। এ সময় বক্তারা বলেন, মুনাফালোভী মাছ ব্যবসায়ী ও অসৎ বন কর্মকর্তার যোগসাজশে আগুন লাগানো হয়। এ ছাড়া অদক্ষ মৌয়ালদের কারণে বনে বারবার আগুন লাগছে। এর দায় বন বিভাগ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।

নতুন এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ার তেমন শঙ্কা নেই জানিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের (বাগেরহাট) উপসহকারী পরিচালক মো. সাইদুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা আগুনকে কর্ডন (নির্দিষ্ট স্থানে বেষ্টনী) করে ফেলেছি। প্রায় আড়াই কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত হয়েছিল আগুন। ফায়ার লাইন কেটে আমরা চারপাশ ঘিরে ফেলেছি। অন্ধকার নেমে আসায় এবং জোয়ার শেষে ভাটা শুরু হওয়ায় পানি নেওয়া যাচ্ছে না। সেই সঙ্গে সাপসহ বন্যপ্রাণীর ঝুঁকি থাকায় আজকের মতো (গতকাল) কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে– সোমবার ভোর সাড়ে ৫টায় আবার কাজ শুরু হবে।’

অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেবকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সুন্দরবন-পূর্ব বন বিভাগ। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ/ হাসনা

Loading


শিরোনাম বিএনএ