29 C
আবহাওয়া
৭:৩৮ পূর্বাহ্ণ - এপ্রিল ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » শিশুর মুখে হাসি ফুটালেন মিজানুর রহমান মজুমদার

শিশুর মুখে হাসি ফুটালেন মিজানুর রহমান মজুমদার

শিশুর মুখে হাসি ফুটালেন মিজানুর রহমান মজুমদার

বিএনএ, চট্টগ্রাম: মাত্র ২ বছর বয়সের ফুটফুটে শিশু আয়ান। ছাগলনাইয়ার নিজপানুয়া গ্রামের বাসিন্দা। দরিদ্র পরিবারে জন্মগত ত্রুটি নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে। শিশুটির জন্মগতভাবেই মলত্যাগের কোন পথ ছিলনা। দরিদ্র বাবা-মা মানুষের থেকে সাহায্য নিয়ে প্রথম অপারেশন করে পেটের এক পাশ দিয়ে মলত্যাগ করার ব্যবস্থা করেন। এরপর থেকে পেটের ফুটো স্থান দিয়ে মলত্যাগ করতো। কিন্তু এখানেই অপারেশন শেষ নয়। করতে হবে আরও ২টি ব্যায়বহুল ও জটিল অপারেশন। এতটুকু বাচ্চার শরীরে একের পর এক অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত।

অসহায় মা-বাবা ফুটফুটে সন্তানের দিকে তাকিয়ে আড়ালে কান্না করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিলনা। জটিল অপারেশনের টাকা কিভাবে সংগ্রহ করবে, কার কাছে সাহায্য চাইবে, অপারেশন না করলেতো আমাদের নাড়িছেঁড়া ধন মায়ের বুক খালি করে চলে যাবে। এমন জল্পনা-কল্পনায় কত রাত সজাগ ছিলো শিশু আয়ানের বাবা-মা। আয়ানের জন্য ঘুমের মাঝে আঁতকে উঠতেন গর্ভধারীনি মা।

সমাজসেবক মিজানুর রহমান মজুমদার ছাগলনাইয়া থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের জন্য দক্ষ মেডিকেল টিম গঠন করেন। তারা রোগীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল গাইডলাইনসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা করে থাকেন।

আয়ানের বাবা- মাকে একজন পরামর্শ দেন, আপনি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক মিজানুর রহমান মজুমদার সাহেবের কাছে যান। উনার কাছে গেলে কেউ খালি হাতে ফিরে আসেননা। মা-বাবা চিকিৎসা সহায়তার জন্য শিশু আয়ানকে নিয়ে ছুটে যান উনার বাড়িতে। সন্তানের সকল সমস্যা তুলে ধরেন। মিজানুর রহমান মজুমদার শিশু আয়ানের বাবা-মায়ের সকল কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেন। সাথে সাথে তিনি আশ্বস্থ করেন, আয়ানের সকল চিকিৎসা খরচ তিনি বহন করবেন।

যেমন কথা তেমন কাজ। তিনি সাথে সাথে চট্টগ্রামস্থ মেডিকেল টিমকে আয়ানের চিকিৎসা বিষয়ে অবগত করেন। মেডিকেল টিমের সহায়তায় আয়ানকে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকরা অপারেশনের তারিখ নির্ধারণ করেন কিন্তু বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ আঘাত হানায় অপারেশন সেদিন আর হয়নি। নতুন করে আবার অপারেশনের তারিখ দেওয়া হয়।

গত ২৭ মে আয়ানের জটিল ২টি অপারেশন সম্পন্ন করা হয়। এই অপারেশনের মাধ্যমে আয়ানের নতুন করে মলত্যাগ করার পথ তৈরি করা হয়। আয়ান এখন অনেকটুকু সুস্থতাবোধ করছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।

শুধু আয়ান নয়, ছাগলনাইয়া থেকে অনেক জটিল রোগী সমাজসেবক মিজানুর রহমান মজুমদারের চিকিৎসা সহায়তার জন্য চট্টগ্রাম আসেন। ইতোমধ্যে অনেক দরিদ্র, অসহায় রোগীর অপারেশনসহ চিকিৎসা সহায়তা দিয়ে আসছেন তিনি। বর্তমানে একজন আগুনে দগ্ধ রোগী ও সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত অপর একজন রোগীর চিকিৎসা সহায়তা চালিয়ে যাচ্ছেন। চট্টগ্রামে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সুবিধার্থে অস্থায়ী আবাসনের জন্য অতিথিশালা চালু করা হয়েছে। চিকিৎসাধীন রোগী ও রোগীর স্বজনরা অতিথিশালায় অবস্থান করে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করতে পারছেন।

আয়ানকে মা ও শিশু হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে। ১০ দিন পর আবারও চেক-আপে আসতে হবে। খুব চঞ্চল শিশু আয়ান। কাউকে দেখলে লাফ দিয়ে কোলে উঠতে চায়। আয়ানের মা হাসপাতাল থেকে বিদায় নেওয়ার সময় দেখলাম তিনি কাঁদছেন, হঠাৎ আমার হাত ধরে বললেন, আমার ছেলেটা এখন হাসে। আমরাও এখন তার সাথে হাসি। এটা মিজান সাহেবের উছিলায়। উনি যদি আমার ছেলের অপারেশনের ব্যবস্থা না করতেন তাহলে হয়তো আয়ানকে বাঁচানো যেত না।

প্রতিবেদন/মো. নেছার,জিএন,বিএম

Loading


শিরোনাম বিএনএ