29 C
আবহাওয়া
৫:১৪ পূর্বাহ্ণ - এপ্রিল ২০, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ক্রাইম পেট্রোল দেখে স্কুলছাত্রকে খুন, ৫ ছাত্র আটক

ক্রাইম পেট্রোল দেখে স্কুলছাত্রকে খুন, ৫ ছাত্র আটক

ক্রাইম পেট্রোল দেখে স্কুলছাত্রকে খুন, ৫ ছাত্র আটক

বিএনএ: খুলনার ডুমুরিয়ায় অপহরণের পর গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র নীরব মণ্ডলকে (১৩) হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করা হয়েছে একই স্কুলের পাঁচ ছাত্রকে। পুলিশ জানায়, ভারতীয় সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রোল’ দেখে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করে নীরব মণ্ডলকে হত্যা করেছে।

নিহত নীরব খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া পূর্বপাড়া এলাকার পান-সুপারি ব্যবসায়ী শেখর মণ্ডলের ছেলে।

হত্যার ঘটনায় আটকরা হয়েছে-গুটুদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র সোহেল মোল্লা (১৫), হীরক রায় (১৫) ও পিতু মণ্ডল (১৪), দশম শ্রেণির ছাত্র পিয়াল রায় (১৫) ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র দ্বীপ মণ্ডল (১৩)। তাদের মধ্যে পিয়ালের বাড়ি ডুমুরিয়ার ভান্ডারপাড়া তেলিগাতি এলাকায় এবং অন্য চারজনের বাড়ি গুটুদিয়া এলাকায়।

ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ কনি মিয়া জানান, নীরব মণ্ডল গুটুদিয়া এসিজিবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) স্কুল ছুটির পর পিয়াল নামে এক ছেলে নীরবকে ডেকে নিয়ে যায়। স্কুলের পেছনে পরিত্যাক্ত একটি ভবনে মধ্যে অবস্থান করছিল পিতু, সোহেল এবং দ্বীপ। পুলিশ জানায়, আটকদের ভাষ্য অনুযায়ী-তাদের পরিকল্পনা ছিল অজ্ঞান করে তার বাবার কাছ থেকে টাকা আদায় করা। কিন্তু তারা প্রথমেই তাকে রশিতে ঝুলিয়ে মেরে ফেলে। ২-৩ জন রশি টেনে ধরে রাখে, নীরব সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়।

কনি মিয়া জানান, সেখানে নীরবের মরদেহ রেখে তারা তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায়। হীরকের দায়িত্ব ছিল নীরবের বাবার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করার। পরে ওই নম্বরে ফোন দিয়ে নীরবের বাবার কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। বিষয়টি জানার পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচজনকে আটক করে। মরদেহ উদ্ধারের আগে প্রথমে সোহেলকে আটক করা হয়। পরে দ্বীপ, পিয়াল ও পিতুকে আটক করা হয়। আর মরদেহ উদ্ধারের পর হীরককে আটক করা হয়।

ওসি কনি মিয়া বলেন, আটককৃতরা ক্রাইম পেট্রোলের একটি পর্ব দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। সেই প্ল্যান অনুযায়ী কার কি ভূমিকা থাকবে, সেই  অনুযায়ী তারা ভূমিকা নিয়েছে। তারা এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তারা ক্রাইম পেট্রোল দেখেই ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি এবং আগে পরে কি করবে সেই অনুযায়ী কাজ করেছে।

পুলিশ জানায়, সমাজিকভাবে কিশোর অপরাধের প্রবণতা বেড়েছে। তারই একটা অংশ হিসেবে ছেলেগুলো এতো সহজেই এ ধরনের কঠিন একটি অপরাধ করতে সাহস পেয়েছে। তারা জানিয়েছে টাকার জন্যই নীরবকে অপহরণ করা হয়। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগে তাকে রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলা হয়। এ ঘটনায় আটককৃত পাঁচজনকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। ময়নাতদন্তের শেষে নীরব মণ্ডলের সৎকার করা হয়েছে।

নিহত নীরব মণ্ডলের বাবা শেখর মণ্ডল জানান, স্কুল ছুটির পর নীরব বাড়িতে না ফেরায় ফোন করে তাকে জানানো হয় নীরব ফেরেনি। এরপর ফোনে একজন নীরবের মুক্তির জন্য টাকা দাবি করে এবং পুলিশকে না জানাতে বলে। এ সময় আমি বলি পুলিশকে জানাবো, তখন ফোন কেটে দেয়। বিষয়টি আমি ডুমুরিয়া থানা পুলিশকে জানাই। পুলিশ ওই মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করে  তাদেরকে আটক করে।

সন্তান হত্যার বিচার দাবি করেন শেখর মণ্ডল বলেন, এমনভাবে যেন আর কোনো মা-বাবার বুক খালি না হয়। হত্যায় জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি চান তিনি।

বিএনএনিউজ/এ আর

Loading


শিরোনাম বিএনএ