।।ইয়াসীন হীরা।।
মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ তাদের ভণ্ডামি মতবাদ প্রচার করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ক) মসজিদ মাহফিল খ) এশায়াত সেমিনার (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য) গ) এশায়াত মাহফিল (গ্রামাঞ্চলের মানুষের জন্য) ঘ) এশায়াত সম্মেলন ও গাউছুল আজম কনফারেন্সঃ নগর, জেলা, বিভাগ, দেশ ও বিদেশের জন্য)
এশায়াত একটি আরবী শব্দ। এ শব্দের বাংলা আবিধানিক অর্থ হচ্ছে প্রচার। সম্মেলন শব্দের অর্থ হচ্ছে সমাবেশ। সুতারাং এশায়াত সম্মেলন হচ্ছে সমাবেশের মাধ্যমে প্রচার।মুনিরীয়া তবলীগের প্রধান মুনিরউল্লাহ আহমদী অনুসারিদের কাছে বার্তা দিয়েছেন এশায়াত সম্মেলন হচ্ছে “এজতেমাউল মোখলেছীন” অর্থাৎ সঠিক বান্দাদের সমাবেশ।কিন্তু সঠিক বান্দাদের সমাবেশে অসঠিক বক্তব্য প্রচার করে যাচ্ছেন মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি, বাংলাদেশ। “এশায়াত সম্মেলনকে মুনিরীয়া অনুসারিদের কাছে“ ঈদ” নামে উপস্থাপন করা হয়েছে। তারা এশায়েত সম্মেলনকে খুশির ঈদ হিসাবে পালন করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির ব্যানারে মুনির উল্লাহ তার মতবাদ প্রকাশ করতে প্রচুর পুস্তক, স্মরণিকা, ক্রোড়পত্র, বুলেটিন প্রকাশ করেন। এর মধ্যে রয়েছে ১) তোফায়ে আহমদী ২) ত্রৈমাসিক ফজলে আহমদী ৩) কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের তরিক্বত, আল্লাহ প্রাপ্তির সহজ পথ ৪) মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ৫) এশায়াত কি ও কেন? ৬) এইতো হেরার নূর পূর্ণাঙ্গ বিধান মুকুর ৭) কাগতিয়ার সেই মহান মোর্শেদ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী ৮) মনোগ্রামে ছিরাতুল মোস্তাকিম ৯) মুক্তির পয়গাম ১০) বাগে আহমদী ১১) যুগে যুগে গাউছুল আজমের ধারাবাহিকতায় কাগতিয়ার মহান মোর্শেদ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী ১২) তরিক্বত জীবন ১৩) রদ্দে এ’লান ১৪) রদ্দে আন-নূর ১৫) যুগে যুগে গাউছুল আজমের আগমন ১৬) মুনিরুল উছুল ফি এছবাতে খলিফাতির রাসূল (খলীফায়ে রাসূল) ১৭) জমানার বিস্ময়কর তাপস্বী রমণী ১৮) বিশেষ স্মরণিকা’০৯ (১৯) এশায়াত সম্মেলন ‘০৯ বুলেটিন এবং (২০) আল হাবিবু মা ‘আল হাবীবে ফিল ইসরা স্মরণিকা ইত্যাদি।
বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি(বিএনএ)টিম মুনিরীয়া যুব তবলীগ প্রকাশিত উল্লেখিত প্রকাশনা সমূহ পর্যালোচনা করে প্রাথমিকভাবে যে সব ভ্রান্ত মতবাদ গুলো পেয়েছে তা এখানে উল্লেখ করা হলো।
১. মহানবী হয়রত মুহাম্মদ (সা.) গাউছুল আজম শায়খ মওলানা তফজ্জল আহমদকে তাজ শরিফ (টুপি)পরিয়ে দিয়েছেন।
২.কাগতিয়ার পীর সাহেব গাউছুল আজম হলেন ‘আওলাদে রাসূল’।
৩. এশায়াত সম্মেলন হচ্ছে মুনিরীয়াদের ‘ঈদ’।
৪.গাউছুল আযমের ছোহবতে কিছুক্ষণ অবস্থান করলে হাজার বছর মকবুল ইবাদতের সমান ছওয়াব অর্জন করা যায়।
৫. মহানবী (সা.) তাদের পীরকে কুতুবুল ওয়াক্ত বলে সম্বোধন করেছেন। প্রকাশ থাকে যে, কুতুবুল ওয়াক্ত অর্থ গাউছুল আজম।
৬.গাউছুল আজম এর ‘তাওয়াজ্জুহ্ বিল গায়েব’ (অদৃশ্য তীক্ষ্ণদৃষ্টি)-এর মাধ্যমে কাছে কিংবা দূরের মুরিদানদের সিনায় মহানবী (সা.) এর বাতেনী নূর নিক্ষেপ করে তাদের অন্তরের গুনাহর কালিমা দূর করা হয়।
৭. গাউছুল আজম এর মুরিদদের মৃত্যুর পরও হক্কুল ইবাদ (বান্দার হক) থেকে বাঁচানোর ক্ষমতা রয়েছে।
৮.কাগতিয়া আলিয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফে হযরত মুহাম্মদ (সা.) তাশরিফ আনেন।
৯.গাউছুল আজমের উছিলায় বৃষ্টি বর্ষণ হয়, ফসল উৎপাদন হয় ও জীবন দান করা হয় ইত্যাদি।
১০. মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ওপর দরূদ পাঠ করার সময় তিনি হাজির ও নাজির থাকেন।
উল্লেখিত বক্তব্য সমূহের কোরআন, হাদিস, এমনকি যুক্তিভিত্তিক কোন ব্যাখ্যা নেই। মুনিরীয়া অনুসারিদের এসব বিশ্বাস প্রকৃত ইসলাম ধর্মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
পূর্বের প্রতিবেদনগুলো পড়তে ক্লিক করুন-মুনিরীয়ার ভণ্ডামি
মুনিরীয়ার ভণ্ডামি-৪
মুনিরীয়ার ভণ্ডামি-৩
মুনিরীয়ার ভণ্ডামি-২
মুনিরীয়ার ভণ্ডামি-১