30 C
আবহাওয়া
৫:৩৭ অপরাহ্ণ - মার্চ ২৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-১১

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-১১

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র একটি প্রামাণিক গ্রন্থ যা ১৯৭১ সালে এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সংগঠিত বিভিন্ন ঘটনার বিস্তারিত তথ্যভান্ডার হিসাবে স্বীকৃত। ১৫ খন্ডে প্রকাশিত এ তথ্য ভান্ডারে এমন কিছু তথ্য রয়েছে যা সাধারণ মানুষের অজানা। বিশেষ করে এ প্রজন্ম জানেই না কত রক্ত, কত কষ্ট, নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে।

গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ অর্জন ও উন্নয়নে বিশ্বের বিস্ময়। বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে বাঙ্গালি জাতি বিলীন হয়ে যেত! এমনটাই মনে করেন সমাজ বিজ্ঞানীরা। নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস জানাতে ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি (বিএনএ) ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করে আসছে। ওয়েব সাইট সার্ভার রক্ষনাবেক্ষণ জটিলতার কারণে কিছু দিন বন্ধ ছিল। আবারও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করতে যাচ্ছে। ১ মার্চ থেকে প্রকাশিত হচ্ছে বাংলাদেশ স্বাধীনতার  নেপথ্যে গণ মাধ্যমের ভূমিকা, বিশেষ করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের।

আজ প্রকাশিত হলো 

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-১১

আজ ২৫শে সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ সাল। বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের মুক্তি, অধিকার ও স্বাধীনতা সংগ্রামের আজ ছ’মাস পূর্ণ হলো।

ছ’মাস আগে ২৫শে মার্চের কাল রাতে জঙ্গী ইয়াহিয়া তার বর্বর সেনাবাহিনীকে লেলিয়ে দেয় বাংলার নিরীহ নিরস্ত্র জনসাধারণের উপর। লক্ষ লক্ষ নারী পুরুষ আর শিশু হত্যার এক কলঙ্কিত ইতিহাস রচনা করে জঙ্গীশাহী সমগ্র বিশ্ববাসীকেও স্তম্ভিত করে দিয়েছে। কিন্ত বর্বর বাহিনীর নৃশংসতার জবাব দিতে বাংলার ছাত্র, যুবক, ই পি আর, আনসার আর বেঙ্গল রেজিমেন্টের বীর জোয়ানরা গড়ে তোলেন এক অপ্রতিদ্বন্দী মুক্তিবাহিনী। প্রতি রণাঙ্গনে তারা প্রচন্ড আঘাত হেনে চলেছেন শত্রু বাহিনীর উপর। চূড়ান্ত বিজয় এখন সন্নিকটে।

সোনার বাংলার সোনালী আকাশ, রুপালী নদী আর শ্যামল প্রান্তরে তাজা রক্তের অর্থ দিয়ে যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধা শত্রু হননের দৃঢ় প্রত্যায়ে আত্নোৎসর্গ করেছেন তাঁদের অমর আত্নার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে এবং চূড়ান্ত বিজয়ের দুর্বার শপথে যাঁরা অবিরাম যুদ্ধ করে চলেছেন তাদেরকে সংগ্রামী অভিনন্দন জানিয়ে আমাদের আজকের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু করছি।

বাংলাদেশের মাটি থেকে হানাদারদের চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার এ মরণজয়ী সংগ্রামে যারা শহীদ হয়েছেন এবং যারা অপ্রতিরোধ্য শক্তি নিয়ে অবিরাম যুদ্ধ করে চলেছেন তাদেরকে সংগ্রামী সালাম জানিয়ে আজকের অগ্নিশিখা অনুষ্টান শুরু করছি। ২৫শে মার্চ ১৯৭১ সালে বাঙালী জাতির উপর সেদিন নেমে এসেছিল শতাব্দীর ভয়াবহতম বিভীষিকা। হানাদার পশ্চিম পাকিস্তানী পশুশক্তি বনমানুষের মত ঝাপিয়ে পড়েছিল বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের উপর। কিন্ত সংগ্রামী বাঙালী জাতি সে আক্রমণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল দেশমাতৃকার মুক্তিমন্ত্রে। সংগ্রাম চলেছে অবিরাম-১দিন-২দিন- ১মাস-২মাস। আজ ২৫শে সেপ্টেম্বর। মুক্তিসংগ্রাম আজ সাফল্যজনকভাবে অতিক্রম করলো দীর্ঘ ছয়টি মাস। সংগ্রাম চলছে, চলবে- যতদিন না দেশ থেকে শেষ শত্রুসৈন্যটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।

বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে শহীদানের প্রতিটি রক্তবিন্দু আজ উদ্দীপ্ত করেছে স্বাধীনতার সূর্যকে। এই স্বাধীনতা সংগ্রামের লক্ষ লক্ষ মুক্তিসেনা আর কোটি কোটি বীর বাঙালীকে সংগ্রামী অভিনন্দন জানিয়ে আমাদের আজকের অধিবেশন এখানেই শেষ করছি। জয় বাংলা।

(তথ্যসুত্র:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র – ৫ম খন্ড। পৃষ্ঠা নং ২৪)

চলবে

আরও পড়ুন আগের পর্ব :

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-১০

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৯

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৮

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৭

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৬

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৫

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৪

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৩

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০২

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০১

সম্পাদনা: এইচ চৌধুরী, গ্রন্থনায়: ইয়াসীন হীরা

Loading


শিরোনাম বিএনএ