বিএনএ রিপোর্ট : ফেনী জেলায় সৃষ্ট প্রাকৃতিক বন্যায় বিপর্যস্ত এ অঞ্চলের পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ। ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী, পরশুরাম, ফেনী সদর, দাগনভূঁঞা ও সোনাগাজী—এ ছয় উপজেলা পুরোপুরি বন্যাকবলিত। স্থানীয় স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা ও মন্দিরের ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে। সেখানে সুপেয় পানি ও খাবারের সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। বানভাসী মানুষ অসহায় ও মানবেতর জীবন যাপন করছে। অনেকে নিজের শেষ সম্বল ও মাথা গোঁজার ঠাঁই টুকু হারিয়ে আজ দিশেহারা। কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর সহ বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। সৃষ্ট বন্যায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে বানভাসী মানুষ অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছে। বিশুদ্ধ পানির অভাবে বন্যার্ত মানুষজন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
শুক্রবার(৩০ আগস্ট) র্যাব-৭, চট্টগ্রাম সূত্র জানায়, এমন অবস্থায় চলমান বন্যা পরিস্থিতির শুরু থেকেই র্যাব ফোর্সেস বিভিন্ন বন্যা কবলিত এলাকার বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ ও ২৮ আগস্ট ২০২৪ র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ও মুন্সিরহাট এলাকার এবং দাগনভূঁইয়া উপজেলার রামনগর ও পূর্ব চন্দ্রপুর এলাকার বন্যাদুর্গত এলাকায় সহস্রাধিক পরিবারের মাঝে নিত্যপ্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী, যেমন- চাল, ডাল, তৈল ইত্যাদি ত্রাণ সামগ্রী এবং শুকনো খাবার যেমন-খেজুর, চিড়া, মুড়ি, গুড় সহ বিশুদ্ধ পানি, খাবার স্যালাইন, মোমবাতি, গ্যাসলাইটার, ইত্যাদি বিতরণ করে। এছাড়াও গত ২৫ এবং ২৬ আগস্ট ২০২৪ র্যাব-৭, চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে ফেনী জেলার ফুলগাজী, পরশুরাম ও ফেনী সদর—এ তিন উপজেলার বন্যাদুর্গত ৪০০ পরিবারের মাঝে নিত্যপ্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ এবং বন্যার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আটকে পড়া যাত্রীগণ এবং আশ্রয়স্থলসমূহে আশ্রয় গ্রহণকারীদের মাঝে রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হয়।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম সূত্র আরও জানায়, বন্যা এবং বন্যা পরবর্তী সময়ে খাদ্য সংকট, পানীয় জলের দুষ্প্রাপ্যতা এবং বিভিন্ন ধরণের পানিবাহিত রোগের ব্যাপারে র্যাব-৭ জনমানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাবে। এছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই দুর্যোগ মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছে র্যাব-৭। র্যাব-৭ মানবিক বিপর্যয় রোধে বন্যার্তদের মাঝে চলমান মানবিক সহায়তা প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে। বন্যা পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে কেউ যেন আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে সেজন্য র্যাব-৭ কর্তৃক নিয়মিত টহল কার্যক্রমের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
ফেনী জেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে যে কোন মানবিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি সকলের জানমালের নিরাপত্তা প্রদানে র্যাব-৭ এর প্রতিটি সদস্য দেশাত্মবোধ, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। বন্যার্তদের উদ্ধার কার্যক্রম, মানবিক সহায়তা প্রদান সহ যে কোন প্রয়োজনে সকলকে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর কন্ট্রোল রুমের সাথে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ করা হলো।
বিএনএ, এসজিএন/এইচমুন্নী