বিএনএ ডেস্ক: প্রযুক্তি ব্যবহার করে পাচারকারীরা আরও বড় ক্ষতি করতে পারে। তবে সরকারি সংস্থা এবং সংশ্লিষ্টরা প্রযুক্তির সাহায্যে মানবপাচারকারীর প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে যে মানবপাচার একটি আন্তঃসীমান্ত অপরাধ। পাচারকারীরা একটি নির্দিষ্ট দেশের প্রচলিত প্রযুক্তির চেয়ে ভালো প্রযুক্তির অধিকারী হতে পারে। এ ক্ষেত্রে উন্নত দেশ এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের মানবপাচার রোধে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিগত অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে হবে।
শনিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে এক অনুষ্ঠান অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মানবপাচার বন্ধে উন্নত দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন উন্নত দেশগুলোর শুধুমাত্র পরামর্শ নিয়ে এগিয়ে আসা উচিত না। জানান, গত ১০ মাসে পাচারের শিকার ২ হাজার ৫০০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য ও চাকরির সুযোগের ব্যবধান কমাতে উন্নত দেশগুলোর এগিয়ে আসা উচিত। শুধু পরামর্শের সাহায্যে এগিয়ে আসা উচিত নয়। আরও কাজের সুযোগ তৈরিতে আমাদের সাহায্য করা উচিত। এটি মানুষের প্রবণতা, ঠিক যেমন পানি উঁচু থেকে নিচের দিকে প্রবাহিত হয়।
তিনি বলেন, প্রযুক্তি বন্দুকের মতো; এটা যদি অপরাধী ও হত্যাকারীর হাতে থাকে, ইস্যু ভয়ঙ্কর হতে পারে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি তাদের অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধে টুল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। ইতোমধ্যে মানবপাচার রোধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিস্তৃতভাবে ৪টি বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে-সচেতনতা তৈরি, রিপোর্টিং, উদ্ধার ও পাচারকারীদের বিচার।
মন্ত্রী জানান, বিদেশে আমাদের মিশনগুলো এই ৪টি ক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত রয়েছে। সচেতনতা শুধুমাত্র সুশীল সমাজের নেতাদের মধ্যে নয়, জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য আমাদের উদ্যোগ রয়েছে। জানান, প্রবাসীকর্মীরা যেন পাচারকারীদের খপ্পড়ে না পড়ে সেজন্য দেশে ও বিদেশে কনসুলার এবং কল্যাণ পরিষেবা দিতে একটি গতিশীল মোবাইল অ্যাপ দূতাবাস চালু করেছি। জরুরি সহায়তার ক্ষেত্রে, নাগরিকরা ৩ সেকেন্ডের জন্য এসওএস বোতাম চেপে ধরে রাখলে জরুরি সহায়তার অনুরোধ তার পূর্ব-নিবন্ধিত তথ্য বাংলাদেশ মিশনে চলে যাবে।
মন্ত্রী জানান, আমাদের প্রতিটি মিশনে ২৪ ঘণ্টার জন্য হটলাইন চালু রয়েছে। বিদেশে যে কোনো পাচারের ঘটনা ঘটলে হটলাইনের মাধ্যমেও জানানো যাবে। দেশে এমন ঘটনা ঘটলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে না গিয়েও তথ্য সহজেই জানানো যাবে। জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করলে তাত্ক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়া হয়।
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত ১ দশমিক ১ মিলিয়ন রোহিঙ্গাদের মধ্যে মাদক ও মানবপাচার কমিয়ে আনতে আমরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৫জি ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখতে চেয়েছি। যদি পরবর্তীতে পশ্চিমা ক্ষমতাসীনদের অনুরোধে তা সরবরাহ করা হয়েছে।
বিএনএ/ এ আর