বিএনএ, কক্সবাজার: কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় পানের বরজে কাজ করার সময় দুজন কৃষককে কুপিয়ে জখম ও অপর দুজনকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। রোববার (৩০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা পাহাড়ের পাদদেশে এই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল ইসলাম।
অপহরণের শিকার দুজন হলেন- ওই ওয়ার্ডের জাহাজপুরার বাসিন্দা বাছা মিয়ার ছেলে রহিম উদ্দিন (৩২) ও মো. সরোয়ারের ছেলে মো. রিদুয়ান (১৯)। তারা সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। সন্ত্রাসীদের মারধর ও অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন একই এলাকার বাসিন্দা দুই সহোদর আবদুল আমিন (২৫) ও আবদুল্লাহ (১৭)।
ভুক্তভোগী পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিনের মতো আজ সকালে পাহাড়ের পাদদেশে পানের বরজে কাজ করতে যান তাঁরা চারজন। এ সময় কয়েকজন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে তাদের ঘিরে ধরে অপহরণের চেষ্টা করলে তাদের মধ্যে হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা দুজনকে কুপিয়ে জখম করে এবং অপর দুজনকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা যাওয়ার সময় কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
আহত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, সন্ত্রাসীরা সবাই মুখোশ পরা অবস্থায় ছিল। তাদের হাতে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ছিল। কোনোরকমে তারা দুজনে পালিয়ে আসতে পারলেও রহিম উদ্দিন ও রিদুয়ানকে সন্ত্রাসীরা ধরে নিয়ে গেছে। ধারালো অস্ত্রের কোপে আবদুল আমিন মাথায় ও আবদুল্লাহ হাতে আঘাত পেয়েছেন। তারা কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, অপহৃত ব্যক্তিদের অবস্থান সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সন্ত্রাসীরা পরিবারের কাছে দুপুর পর্যন্ত ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করেনি। গত কয়েকমাস ধরে এ এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন অপহরণ করে নিয়ে মুক্তিপণ আদায় করে আসছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। এতে পাহাড়ের পার্শ্ববর্তী বসবাসরত লোকজন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক মশিউর রহমান বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা আমাদের কেউ অবহিত করেনি। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত ৬ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৬২ জন ব্যক্তিকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৩৪ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকি ২৮ জন রোহিঙ্গা। অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
বিএনএনিউজ/শাহীন,বিএম