24 C
আবহাওয়া
১১:১৬ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ১০, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » আওয়ামী লীগের ৪০০ নেতাকর্মী খুন, আইসিসিতে মামলা!

আওয়ামী লীগের ৪০০ নেতাকর্মী খুন, আইসিসিতে মামলা!


বিএনএ, ঢাকা : বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত–আইসিসিতে এখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধে দায়ের হওয়া হত্যা মামলার শুনানি পুরোদমে চলছে। ২০২৪সালের ৫ই অগাস্ট অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারিয়ে ভারতে চলে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

YouTube player

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট সময়ে আন্দোলন দমনে ১৪০০ জনকে হত্যার উসকানি, প্ররোচনা ও নির্দেশ দান, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসেবলিটি’ এবং ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজের’ মোট পাঁচ অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন। আগামী মাসে একটি মামলার রায় ঘোষণার কথা রয়েছে।

এই অবস্থায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান আসামী করে পাল্টা মামলা করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
তবে এই মামলাটি বাংলাদেশে নয়- করা হয়েছে নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত–আইসিসিতে। লন্ডনের ডাউটি স্ট্রিট চেম্বার্সের আইনজীবী স্টিভেন পাওলস কেসি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ দাখিল করেছেন। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ‘হত্যা, নির্বিচারে গ্রেপ্তারসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের’ অভিযোগে মামলাটি করা হয়। ডাউটি স্ট্রিট চেম্বার্সের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

আইসিসিতে পাওলসের দাখিল করা আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ‘প্রায় ৪০০’ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে, যাদের অনেককে ‘মব তৈরি করে পিটিয়ে হত্যা’ করা হয়েছে।

এসব ঘটনার প্রমাণ হিসেবে ভিডিও ও সাক্ষ্য যুক্ত করে নথিতে বিস্তারিত বিবরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ডাউটি স্ট্রিট চেম্বার্সের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

আবেদনে বলা হয়েছে, “এসব হত্যা, বেআইনি আটক ও নির্যাতনের ঘটনা মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল এবং এর সুষ্ঠু তদন্ত বা বিচার বাংলাদেশে হওয়ার কোনো বাস্তব সম্ভাবনা নেই।
এছাড়া আওয়ামী লীগের সঙ্গে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে যুক্ত ব্যক্তিদের ‘অযৌক্তিকভাবে গ্রেপ্তার করে জামিন বা অভিযোগ ছাড়াই কারাগারে পাঠানোর’ অভিযোগও করা হয়েছে।

আবেদনে আরও বলা হয়েছে, রাজনীতিক, বিচারক, আইনজীবী, সাংবাদিক থেকে শুরু করে অভিনেতা ও সংগীতশিল্পীর মত বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ এই ‘নিপীড়নের’ শিকার হচ্ছেন।
সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের পর থেকে কারাগারে ‘অন্তত ২৫ জন’ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে যাদের মৃত্যুর কারণ ‘হৃদরোগ’ বলা হয়েছে, তাদের অনেকের শরীরে ‘নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন’ পাওয়া গেছে।

আইনজীবী স্টিভেন পাওলস বলেছেন, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ‘ডেভিল হান্ট’ নামে যে অভিযান শুরু করে, যার ঘোষিত লক্ষ্য ছিল ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদ’ দমন। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত ওই অভিযানে মাত্র ১২ দিনে প্রায় ১৮ হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আইসিসিতে জমা দেওয়া আবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ১৪ অক্টোবর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি ‘ইমিউনিটি অর্ডার’ জারি করে। যাতে বলা হয়েছিল—“১৫ জুলাই থেকে ৮ আগস্টের মধ্যে আন্দোলনে যারা ভূমিকা রেখেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা, গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হবে না।”

অভিযোগে বলা হয়, “এ ধরনের একতরফা দায়মুক্তি শুধু অপরাধীদের পার পাওয়ার সুযোগ তৈরি করে না, বরং এসব হামলার প্রতি রাষ্ট্রের নীরব সমর্থনেরও ইঙ্গিত দেয়।”

আইসিসিতে দায়ের করা আবেদনে বলা হয়েছে, “তদন্তের মাধ্যমে এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের দায় নির্ধারণ সম্ভব হবে। রাজনৈতিক পরিবর্তনের সময় প্রতিশোধমূলক সহিংসতা এখন বৈশ্বিক উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে; এবং এই ধরনের অপরাধ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এখতিয়ারের মধ্যেই পড়ে।”

জুলাই অভ্যুত্থানের পর মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে শেখ হাসিনার সাবেক সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি এবং আওয়ামী লিগের নেতাকর্মীদের ওপর পরিচালিত ‘প্রতিশোধমূলক সহিংসতার’ বিষয়ে রোম সংবিধির ১৫ নম্বর বিধি অনুযায়ী তদন্ত শুরু করতে আইসিসির প্রসিকিউটরের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০১০ সালের ২৩ মার্চ রোম সংবিধিতে অনুসমর্থন করে বাংলাদেশ। ওই বছরের ১ জুন থেকে তা কার্যকর হয়।

বিএনএনিউজ/শামীমা চৌধুরী শাম্মী/এইচ.এম।

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ