ইসলামাবাদ, ২৭ মার্চ : পাকিস্তানের ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযোগ্য মর্যাদা, উৎসব ও আনন্দের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতীয় দিবস উদ্যাপন করেছে। হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ ও ইসলামাবাদে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিগণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
হাইকমিশনার সকলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ৩০ লক্ষ শহীদ বাঙালির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও বার্তাটি সম্প্রচার করা হয়।
আলোচনা পর্বে বক্তাগণ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের তাৎপর্য, গুরুত্ব ও বাঙালি জাতির স্বাধীকার আন্দোলনে জাতির পিতার অবদান তুলে ধরেন।
হাইকমিশনার গত এক যুগে বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নসহ সবগুলো সূচকে সমানভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ আর্থ সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ঈর্ষনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। তিনি বলেন, তৈরি পোষাক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করে পৃথিবীতে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপন করা হয়েছে। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দার, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সবই এখন দৃশমান। তিনি আরও বলেন পৃথক যমুনা রেলসেতুর জন্য পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
তিনি বাংলাদেশ অর্থনেতিক ও সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশকে ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস অতিমারির বিস্তাররোধের পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু রাখার মাধ্যমে করোনা অতিমারির মধ্যেও বাংলাদেশ ৫ শতাংশের অধিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। এ সকল অর্জন সম্ভব হয়েছে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাজ্ঞ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে। বাংলাদেশ সময়ের আগেই সহস্রাদ্ধ লক্ষমাত্রা ও ‘রূপকল্প-২০২১’ বাস্তবায়ন করেছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জনের মাধ্যমে ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বির্নিমাণে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, অপ্রতিরোধ্য বাঙালি জাতি এ সকল লক্ষ্য অর্জনেও সফল হবে।
সবশেষে তিনি সকল ভেদাভেদ ভুলে যার যার অবস্থানে থেকে একযোগে কাজ করে একটি সমৃদ্ধ ও জ্ঞাননির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মানের আহ্বান জানান।
আলোচনা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।