ইন্সটাগ্রাম-এর ইনফ্লুয়েন্সাররা। যাঁরা নানা ধরনের পোস্ট করে মানুষের মন জয় করে নিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। আবার তাঁদের মধ্যেও রয়েছে সংখ্যার লড়াই, তবে সেটা লাইকের সংখ্যা। যত দিন যাচ্ছে তত প্রতিযোগিতা বাড়ছে। তবে ইনফ্লুয়েন্সাররা যে শুধু লাইক পেয়ে চুপ থাকেন তা নয়। তাঁদের জীবন একটা স্বপ্নের মতো।
তাঁরা প্রত্যেকেই এখান থেকে মোটা অংকের টাকা উপার্জন করেন, কিন্তু সেটা কত? সেই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে হাইপঅডিটরের একটি সমীক্ষা। হাইপঅডিটর ১ হাজার ৮৬৫ জন ইন্সটাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সারের মধ্যে সমীক্ষা করে। এদের মধ্যে ৪৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ মহিলা এবং এর ২৮ শতাংশের বয়স ২৫-৩৪ বছরের মধ্যে।
ইনফ্লুয়েন্সারদের মাসিক গড় আয় ৩ হাজার ডলার।
হাইপঅডিটরের প্রতিবেদন অনুযায়ী ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ ব্যবহারকারী বলেছেন তাঁরা ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টের পোস্ট থেকে টাকা উপার্জন করেন। এক এক জন প্রতি মাসে প্রায় ২ হাজার ৯৭০ ডলার উপার্জন করতে পারেন। তবে এর মধ্যে কিছু পার্থক্যও রয়েছে। যেমন মাইক্রো ও মেগা ইনফ্লুয়েন্সার।
মাইক্রো মানে হল ১ হাজার থেকে ১০ হাজার এর মধ্যে যাঁদের ফলোয়ার সংখ্যা রয়েছে, তাঁরা প্রতি মাসে গড়ে ১ হাজার ৪২০ ডলার উপার্জন করতে পারেন। আর মেগা ইনফ্লুয়েন্সাররা, যাঁদের ১ মিলিয়নের বেশি ফলোয়ারের সংখ্যা রয়েছে, তাঁরা প্রতি মাসে গড়ে ১৫ হাজার ৩৫৬ ডলার উপার্জন করতে পারে।
এঁদের মধ্যে যাঁরা মাইক্রো তাঁদের মধ্যে মাত্র ২২ দশমিক ৯৯ শতাংশ ব্যবহারকারীরা উপার্জন করতে পারেন। অন্য দিকে মেগা ইনফ্লুয়েন্সারদের মধ্যে ৬৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ ব্যবহারকারীর উপার্জন করার সুযোগ থাকে।
ইনফ্লুয়েন্সারদের নানা ধরনের দক্ষতার উপরে উপার্জন হয়ে থাকে। একজন সাধারণ ইনফ্লুয়েন্সার ঘণ্টায় ৩১ ডলার উপার্জন করে নিতে পারেন, সেই জায়গায় একজন রূপটান শিল্পী ঘণ্টায় ৬০ ডলার উপার্জন করে নিতে পারেন। আবার একজন সুপারস্টারের প্রতি ঘন্টায় ১৮৭ ডলার আয় করার প্রমাণও মিলেছে।
ইন্সটাগ্রাম এ পোস্ট হওয়া পছন্দের কিছু ক্যাটাাগরি হল প্রাণী সংক্রান্ত, ব্যবসা সংক্রান্ত, ফিটনেস এবং খেলাধুলা সংক্রান্ত পোস্ট।
ইন্সটাগ্রাম লাইভ থেকে উপার্জন করেন ৫ শতাংশ কম ব্যবহারকারী।
ইন্সটাগ্রাম লাইভ করেও উপার্জন করা যেতে পারে তবে সেটা সবার জন্য না-ও হতে পারে। সমীক্ষা বলছে এমন ব্যবহারকারী ৫ শতাংশ-এর কম রয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ দশমিক ২৭ শতাংশ প্রতি মাসে গড়ে ৫ হাজার ৯১২ দশমিক ৮ ডলার উপার্জন করতে পারেন। অনেকে এটাও বলেছেন, যে করোনা পরিস্থিতিতে তাঁদের উপার্জন বেড়েছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে প্রতারণামূলক ক্রিয়াকলাপও দেখা গেছে।
হাইপঅডিটরের প্রতিবেদন অনুযায়ী ইনফ্লুয়েন্সাররা অনেকেই আছেন যাঁরা ব্র্যান্ড প্রমোশনের কাজ করেন, সেই সংখ্যাও কম নয়, সেটা প্রায় ৪০ দশমিক ১৫ শতাংশ।
উপার্জন তো আর এমনি এমনি হয় না। তার জন্য অনেকটা পরিশ্রমও করতে হয়। সমীক্ষায় বলা হয়েছে ইনফ্লুয়েন্সাররা প্রতি সপ্তাহে গড়ে ২৪ ঘণ্টা ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে সময় দেন। সেটা পোস্ট, স্টোরি অথবা ফলোয়ার্সদের সঙ্গে কথোপকথনের জন্য হতে পারে। সেই সময়টা এক সপ্তাহে বেড়ে ২৮ দশমিক ৭ ঘণ্টা হয়ে যায়। আর যাঁরা কম উপার্জন করে তাঁদের ক্ষেত্রে সময়টা থাকে ২০ দশমিক ৯ ঘণ্টা!