বিএনএ, ঢাবি: বাংলা ভাষা রক্ষার্থে সংগ্রাম করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রনেতাদের উদ্বুদ্ধ ও সংগঠিত করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রো -ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ।
শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি ) ঢাবির আরসি মজুমদার আর্টস মিলনায়তনে ‘ভাষা আন্দোলনের ৭৫ বছর’ শীর্ষক দিনব্যাপী সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র এবং ভাষা শহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালা’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সেমিনারের ৩টি অধিবেশনে মোট ১৫টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।
প্রো- ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ মহান ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসাধারণ অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, গত ৭০ বছরে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা বলেনি কেউ। অথচ ভাষা আন্দোলন সংগঠিত করতে তার অবদান অপরিসীম। বঙ্গবন্ধু ১৯৪৭ সালের ১ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারী ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে ১৯৪৮ সালের ১১মার্চ হরতাল ডাকার নির্দেশ প্রদান করেন এবং পিকেটিংয়ে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে প্রথম গ্রেফতার হন বঙ্গবন্ধু। গ্রেফতার হয়েও জেলে বসে তিনি ভাষা আন্দোলনের দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
তিনি আরো বলেন, বাংলা ভাষা রক্ষার্থে সংগ্রাম করতে ছাত্রনেতাদের উদ্বুদ্ধ ও সংগঠিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। এসময় বস্তুনিষ্ঠ বই পড়ার মাধ্যমে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা ও প্রকৃত ইতিহাস জানার জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান কবি সামাদ।
ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানে শোষণ, নিপীড়ন ও বঞ্চনার ইতিহাস তৈরি হয়, যার প্রথম আঘাত আসে ভাষার উপর। ভাষা আন্দোলনে কৃষক-শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের যুক্ত হওয়ার কারণ ছিলো বস্তুগত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান মূল প্রবন্ধে বলেন, “পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে শাসক গোষ্ঠীর অপরাজনীতি, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন এবং গণবিরোধী প্রশাসন তৈরি হয়। ফলশ্রুতিতে বাঙালি মধ্যবিত্তের আশা ভঙ্গ হয়, যা পরবর্তীতে গণআন্দোলনে রূপ নেয়। এভাবেই ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়।”
ড. আতিউর আরো বলেন, ভাষা আন্দোলনের শুরু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের দ্বারা হলেও তা ছড়িয়ে পড়ে একদম মফস্বলে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারের উদ্বোধনী পর্বে ভাষা আন্দোলন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিকাশ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অনারারি অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাহরিয়ার রহমান।
বিএনএ/ মোছাদ্দেক, বিএম, ওজি