বিএনএ, জবি: ঈদের আগেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জেলে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার মুক্তি দেওয়াসহ বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানো ও কালোবাজারি সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের শাস্তি প্রদান, অত্যাবশকীয় পরিষেবা বিল বাতিল সহ অর্থপাচারকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।
শনিবার (২৪ জুন) পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক মুক্তমঞ্চে ‘প্রতিবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ’ এর ব্যানারে আয়োজিত প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশে বক্তারা এসব দাবি জানান।
সমাবেশে উদীচি কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে মানুষের কণ্ঠ রোধ করে গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরাকে বিনা বিচারে দীর্ঘদিন থেকে জেলে বন্দী করে রাখা হয়েছে। হাইকোর্ট থেকে জামিন দেওয়ার পরও সেটা স্থগিত করা হয়েছে। তার মা দ্বারে দ্বারে ঘুরেও তার জামিন করাতে পারছেন না। এই আইন দিয়ে মানুষকে ভয় দেখিয়ে কণ্ঠরোধ করে দিতে চায়ম যাতে কেউ অন্যায়, অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলতে না পারে। ঈদের আগেই খাদিজার মুক্তি দিতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে গ্রেপ্তারকৃত সকল সাংবাদিক, সাধারণ জনগণকে মুক্তি দিতে হবে। জনগণ এই কালো আইন মেনে নিবেনা।
জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমাম বলেন, অত্যাবশকীয় পরিষেবা বিল নামে নতুন আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। যাতে শ্রমিকরা ধর্মঘট করতে না পারে৷ এই আইন পাস হলে শ্রমিকরা তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনও করতে পারবেনা। তাদের কাজের স্বাধীনতা থাকবেনা। এমন জনস্বার্থবিরোধী যেকোনো আইন প্রণয়নের অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে। বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে। এর মাধ্যমে এই পার্কটিকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। এটা মেনে নেয়া হবেনা।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি দীপক শীল বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে। মানুষ কথা বললেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, হয়রানি করা হচ্ছে। অবিলম্বে এই কালো আইন বাতিল করতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম এখন জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। সকল সিন্ডিকেটকে শাস্তির আওতায় এনে দ্রব্যের দাম কমাতে হবে। যারা সিন্ডিকেট করে জনজীবনে দুর্ভোগ নিয়ে আসছে তাদেরকে শাস্তি দিতে হবে।
চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সহ-সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, বর্তমান সময়ে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বাধা প্রদান করা হচ্ছে৷ সাংস্কৃতিক কর্মীরা সংস্কৃতির চর্চা করতে পারছেনা। এটা বন্ধ করতে হবে। যাত্রা, পালাগান, কবিগান, বাউলগানসহ আবহমান বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতি চর্চাকে উৎসাহিত, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও নিরাপত্তা দিতে হবে।
সমাজ চিন্তা ফোরাম এর আহ্বায়ক কামাল হোসেন বাদল এর সভাপতিত্বে ও ওঙ্কার নাথ ঝলক এর সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘের সহ-সভাপতি জাকির হোসেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি আনোয়ারুল হক, ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক রক্ষা কমিটির সভাপতি মো. আক্তারুজ্জামান খান, শিবু রঞ্জন দে, রঘু অভিজিৎ রায়, তৈমুর খান অপু, নিখিল দাস।
সাংস্কৃতিক সমাবেশে কবিতা ও গান পরিবেশন করেন মফিজুর রহমান লাল্টু, মাসুক শাহী, নুজহাত মনিষা, চম্পা মারাক, প্রফুল্ল দাস প্রমুখ।
বিএনএ নিউজ/ সাহিদুল, ওজি