বিএনএ, ফরিদপুর: অস্ত্রোপচারের সময় এক তরুণীর পেটে কাঁচি রেখে সেলাই করা হয়েছে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে৷ তবে এ ঘটনায় কাউকে দায়ী বা কারো বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করছে না তদন্ত কমিটি৷
কয়েকটি বিদেশি নিবন্ধের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন দেশে এ ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে। তাই অস্ত্রোপচারের সময় আরও সতর্ক থাকতে হবে।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান। এরআগে গতকাল সোমবার হাসপাতালের পরিচালকের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনের বরাতে হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, কার গাফিলতিতে পেটে কাঁচি রাখার ঘটনাটি ঘটেছে, তা শনাক্ত করতে পারেনি কমিটি। তবে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছেন তারা। সেগুলো হলো অস্ত্রোপচারের সময় একজন নার্সকে যন্ত্রপাতির দায়িত্বে নির্দিষ্টভাবে নিয়োজিত করা। পাশাপাশি অস্ত্রোপচারের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয় ও আয়াদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। এ ছাড়া অস্ত্রোপচারের সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২০২০ সালের ৩ মার্চ সার্জারি ইউনিট-দুই এর দায়িত্বে নিয়োজিত সহযোগী অধ্যাপক মোল্লা সরফউদ্দিনের অধীনে এ অস্ত্রোপচারের সময় আরও তিন-চারজন চিকিৎসক অংশ নেন। তবে কার গাফিলতিতে এ ঘটনা ঘটেছে, তা উল্লেখ করা হয়নি। বিশ্বের বিভিন্ন জার্নালের উদ্বৃতি দিয়ে সেখানে বলা হয়েছে, এ জাতীয় ঘটনা অপ্রতুল নয়। এমন নয়, এটিই প্রথম ঘটেছে। এর আগেও বিভিন্ন দেশে অস্ত্রোপচারের সময় এ জাতীয় ঘটনা ঘটেছে।
হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান জানান, ভুক্তভোগী তরুণী মনিরা খাতুন এখন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে।
মনিরা খাতুন (১৮) গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ঝুটিগ্রামের বাসিন্দা খাইরুল মিয়ার মেয়ে। তরুণীটি মেজিনট্রিক ফিস্ট (রক্তের দলা) জনিত সমস্যা নিয়ে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন ২০২০ সালের মার্চে। এরপর ৩ মার্চ সার্জারি বিভাগ ইউনিট টু-তে এ সমস্যার জন্য তার অস্ত্রোপচার করা হয়। ওই সময় চিকিৎসকদের অজ্ঞাতসারে অস্ত্রোপচারের কাজে ব্যবহৃত ছয় ইঞ্চি লম্বা অর্টারি ফরসেপ পেটের মধ্যে রেখে সেলাই করা হয়। বিষয়টি জানার পর ২০২১ সালের ১১ ডিসেম্বর শনিবার ওই হাসপাতালেই পুনরায় অস্ত্রোপচার করে তরুণীর পেট থেকে কাঁচিটি বের করা হয়।
বিএনএ/এমএফ
