22 C
আবহাওয়া
৫:৫১ অপরাহ্ণ - ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » সবশ্রেণীর মানুষকে বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে যাবার আহবান

সবশ্রেণীর মানুষকে বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে যাবার আহবান

ভয়াবহ বন্যা-

সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি ত্রাণ তৎপরতা বাড়াতে হবে

দলমত নির্বিশেষে সকলকে বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে যেতে হবে

শুকনো খাদ্য, পানীয়,জরুরি ওষুধ ত্রাণের তালিকায় রাখুন

 

সামর্থ্যবান ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্যার্তদের জন্য সবধরণের সহায়তা ত্রাণ  নিকটস্থ থানা, জেলা প্রশাসন, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, বিজিবি, ও অন্যান্য বাহিনীর ত্রাণ সংগ্রহ কক্ষে প্রেরণ করুন।

বিএনএ, রিপোর্ট : দশ জেলার ৩৬ লাখ মানুষ ভয়াবহ বন্যা-কবলিত। যেকোন সময় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিমানসমূহ প্রস্তুত রয়েছে।

দুর্যোগ ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম

ফেনী ও নোয়াখালী এলাকায় আকস্মিক ভয়াবহ বন্যার বিষয়ে দুর্যোগ ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেন, আমাদের লক্ষ্য মানুষের জীবন রক্ষা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে নিয়োজিত করা হয়েছে। সংস্কার আন্দোলনের ছাত্ররাও উদ্ধার তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। সার্বিকভাবে প্রশাসন চেষ্টা করছে, সরকার চেষ্টা করছে যাতে মানুষের জীবন, জানমাল, গবাদিপশু রক্ষা করা যায়।

ফারুক-ই-আজম
ফারুক-ই-আজম

ফারুক-ই-আজম বলেন, ত্রাণ হিসেবে খাদ্য এবং নগদ অর্থের সর্বাত্মক প্রস্তুতি আছে। দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা যথাসম্ভব সব প্রচেষ্টা নিয়োজিত করেছি। দ্রুত পানি নামলে পুনর্বাসন কর্মসূচি গ্রহণ করবো।

 দুর্যোগ ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম  সামর্থ্যবান ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহকে বন্যার্তদের সহায়তায় সরকারের পাশাপাশি এগিয়ে যাবার আহবান জানান।

ফেনী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২জনের মৃত্যু

বৃহস্পতিবার(২২ আগস্ট)  দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা  জানান, গত ২০ আগস্ট থেকে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা আটটি- ফেনী, কুমিল্লা, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ৫০ উপজেলা বন্যা প্লাবিত এবং ক্ষতিগ্রস্থ ইউনিয়ন ৩৫৭টি; আট জেলায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৪০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ২৯ লাখ ৪ হাজার ৯৬৪ জন। বন্যায় ফেনীতে একজন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।

অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা জানান, পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে আশ্রয় দিতে মোট ১ হাজার ৫৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় মোট ৭৫ হাজার ৬৬৮ জন ও ৭ হাজার ৪৫৯টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। আট জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য মোট ৪৪৪টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ছবিটি ফেনী জেলার

সংবাদ সম্মেলনে কে এম আলী রেজা আরও জানান, বন্যা আক্রান্ত জেলাসমূহের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আট জেলায় ১ কোটি ৮২ লাখ নগদ টাকা, ১৩ হাজার ৬৫০ মেট্রিকটন চাল এবং ১১ হাজার প্যাকেট শুকনা ও অন্যান্য খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে।

বিজিবি

বৃহস্পতিবার(২২ আগস্ট) বিজিবি’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সীমান্তবর্তী বন্যাদুর্গত এলাকার অসহায় মানুষ উদ্ধার কার্যক্রম, ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ এবং নদী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের পাশে দাঁড়িয়েছে বিজিবি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়নের (৪ বিজিবি) ব্যাটালিয়ন সদরের উদ্ধারকারী দল বিজিবি’র নৌকা ও ট্রলারের মাধ্যমে বন্যাদুর্গত এলাকার ৮ শতাধিক অসহায় মানুষকে উদ্ধার করে জয় লস্করপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জয় লস্করপুর উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছে। পাশাপাশি উদ্ধারকৃত জনসাধারণের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও জরুরী শুকনা খাবারও বিতরণ করছে ।

এছাড়া বিজিবির কুমিল্লা ব্যাটালিয়নের (১০ বিজিবি) অধীনস্থ বিবির বাজার বিওপির দায়িত্বপূর্ণ গোমতী নদীর তীরবর্তী বন্যাদুর্গত এলাকার অসহায় মানুষদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছে বিজিবি। পাশাপাশি বিজিবির উদ্যোগে তাদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রীও বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া গোমতী নদীর তীরে ফাটল দেখা দিলে নদীর ভাঙ্গন রোধে স্থানীয় জনসাধারণকে সাথে নিয়ে বালুর বস্তা ফেলে বাঁধ সংস্কার করে বিজিবি সদস্যরা।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিজিবির রামগড় ব্যাটালিয়নের (৪৩ বিজিবি) অধীনস্থ আধারমানিক, নলুয়াটিলা, লাচারীপাড়া, লক্ষ্মীছড়া বিওপির দায়িত্বপূর্ণ মোট ২৯৬টি পরিবারের ১৫৫০ জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে বিজিবি’র উদ্ধারকারী দল। এছাড়া দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২০০টি অসহায় পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

বিজিবি’র ছোট হরিণা ব্যাটালিয়ন (১২ বিজিবি) দায়িত্বপূর্ণ রাঙ্গামাটির বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নের বন্যা দূর্গত ৫০টি অসহায় পরিবারে মাঝে ত্রাণ সামগ্রী হিসেবে চাউল, ডাল, তৈল, চিনি ও আলু বিতরণ করেছে।
বিজিবির শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়ন (৪৬ বিজিবি) মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী কুরমা বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বন্যার্তদের উদ্ধার তৎপরতার পাশাপাশি বন্যাদুর্গত এলাকার ২ শতাধিক অসহায় পরিবারের মাঝে শুকনো খাবারও বিতরণ করেছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশ নৌবাহিনী

ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় অসামরিক প্রশাসনকে সাহায্য করতে কাজ করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।
আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ জানানো হয়, গতকাল বুধবার থেকে শুরু হওয়া উদ্ধার ও চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমে আজ বৃহস্পতিবার ২টি নৌ কন্টিনজেন্ট যোগ দিয়েছে এবং আরও ২টি কন্টিনজেন্ট ফেনীর উদ্দেশ্যে গমন করবে। স্মরণকালের এই ভয়াবহ বন্যায় পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার করে জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হচ্ছে।


নৌবাহিনীর ১৩ জন কর্মকর্তার নেতৃত্বে প্রয়োজনীয় উদ্ধার সামগ্রী, বোট, লাইফ জ্যাকেট ও ডুবুরিসহ প্রায় দুই শতাধিক নৌ সদস্য উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। উদ্ধারের পাশাপাশি অসহায়, গরীব ও দুঃস্থ মানুষের মাঝে চিকিৎসা সেবা, ঔষধ ও খাবার স্যালাইনসহ মানবিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। সেই সাথে পানিবন্দি মানুষের শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
এছাড়াও প্রায় ১৫ হাজার মানুষের জন্য ত্রাণ সামগ্রী বোঝাই ট্রাক ফেনীর উদ্দেশ্যে রওনা করেছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত নৌবাহিনীর এই উদ্ধার কার্যক্রম, চিকিৎসা সেবা ও ত্রাণ সহায়তা চলমান থাকবে।

বিএনএ, এসজিএন/এইচমুন্নী

Loading


শিরোনাম বিএনএ