বিএনএ ডেস্ক: গত মাসে ভারতের খুচরা মূল্যস্ফীতির হার অনেক বেড়েছে। জুলাই মাসে ভারতের খুচরা মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ, যা গত ১৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। খবর এনডিটিভির।
এ সময় সবচেয়ে বেশি হারে বেড়েছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১১ দশমিক ৫১ শতাংশ। মূলত জুলাই মাসে দেশটির বিভিন্ন কৃষি উৎপাদনকেন্দ্রে অতিবৃষ্টির কারণে খাদ্যের দাম এতটা বেড়েছে, যার প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতিতে।
অথচ জুনে দেশটিতে খুচরা মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৪ দশমিক ৮১ শতাংশ। মে মাসে এই হার ছিল ৪ দশমিক ৩১ শতাংশ। জুন মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়লেও ৪ শতাংশের ঘরেই তা ছিল। এবার এক মাসে তা প্রায় ৩ শতাংশ বেড়ে গেছে। এর আগে ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে ভারতে খুচরা মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ। অর্থাৎ এবারের জুলাই মাসে তা সেই নজিরের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
সাধারণভাবে খুচরা মূল্যস্ফীতির মূল কারণ খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি। সোমবার প্রকাশিত ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যানে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় ভোজ্যতেল ও সবজির দাম বেড়েছে; এমনকি ক্রমেই তা সাধারণ ভোক্তাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ। সবজির কনজ্যুমার প্রাইস ইনডেক্স বা সিপিআই (উপভোক্তা মূল্যসূচক) জুন মাসে ছিল ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ; জুলাই মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ।
চলতি বছরের জুলাই মাসে ভারতে সবজির দাম আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে শস্য ও দানাজাতীয় খাদ্যের ক্ষেত্রে তা বেড়েছে ১৩ শতাংশ। জুলাই মাসে সামগ্রিকভাবে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ১১ দশমিক ৫১ শতাংশ হলেও আগের মাস জুনে তা ছিল মাত্র ৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদদের মতে, আগস্ট মাসে আরও ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে খুচর মূল্যস্ফীতির হার। অর্থাৎ, আমজনতার সমস্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা। বস্তুত, রিজার্ভ ব্যাংক খুচরা বাজারে মূল্যবৃদ্ধিকে ৪ শতাংশের মধ্যে বাঁধার যে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিল, চলতি অর্থবছরে তা পূরণ করা কার্যত অসম্ভব বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ।
জুলাই মাসে ভারতে অতিবৃষ্টির কারণে টমেটোর দাম কেজিতে ১৭৮ রুপি পর্যন্ত উঠে যায়। বন্যার কারণে সরবরাহব্যবস্থা ব্যাহত হয়। ফলে জুলাই মাসে টমেটোর দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতের বাজারে অন্যান্য সবজির দামও বাড়ে। অথচ মার্চ-এপ্রিল মাসে কৃষকেরা এই টমেটো কেজিতে দেড়-দুই টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিলেন।
এদিকে ভারতের বাজারসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বাজারে অস্থিরতা থাকলেও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি ভালো থাকায় রিজার্ভ ব্যাংক আগামী কয়েকটি ত্রৈমাসিকে নীতি সুদহার আর না-ও বাড়াতে পারে। যদিও মূল্যস্ফীতি মোকাবিলার প্রধান হাতিয়ার হলো, নীতি সুদহার বৃদ্ধি করা।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ