16 C
আবহাওয়া
১০:১২ পূর্বাহ্ণ - ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » রোহিঙ্গা ভোটার: পুলিশ পরিদর্শকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

রোহিঙ্গা ভোটার: পুলিশ পরিদর্শকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

দুদকের মামলা

বিএনএ,চট্টগ্রাম: অবৈধ উপায়ে রোহিঙ্গা নাগরিককে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদান এবং পাসপোর্ট আবেদনে সহায়তা করার অভিযোগে ৩ পুলিশ পরিদর্শক, ইসি কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) চট্টগ্রামে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন– কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হোসেন, পটুয়াখালীর পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) এস এম মিজানুর রহমান, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রুহুল আমিন, রংপুর ডিআইজি অফিসের পুলিশ পরিদর্শক প্রভাষ চন্দ্র ধর। তাদের মধ্যে নির্বাচন কর্মকর্তা ও পুলিশ পরিদর্শকসহ ঘটনার সময় কক্সবাজার জেলায় কর্মরত ছিলেন।

মামলায় ১৩ রোহিঙ্গা আসামি হলেন- মো. তৈয়ব, মোহাম্মদ ওয়ারেস, মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, মোহাম্মদ রহিম, আব্দুর রহমান, আব্দুস শাকুর, নুর হাবিবা, আমাতুর রহিম, আসমাউল হুসনা, আমাতুর রহমান, নুর হামিদা, মোহাম্মদ আহমদ এবং হাফেজ নুরুল আলম। এরা কক্সবাজার জেলার সদর উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের আট নম্বর ওয়ার্ডের মৃত জালাল আহমেদের পরিবারের সদস্য হিসেবে পরিচয়পত্র নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে তৈয়বসহ ৯ ভাই, ২ বোন ও তৈয়বের স্ত্রী আছেন। এরা মিয়ানমার থেকে এসে সরকারি খাস জমি দখল করে, সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে কক্সবাজার সদরে অবস্থান নেন। পরে পাঁচজন বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে উমরাহ ভিসার মাধ্যমে সৌদিআরবে চলে যান।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, কক্সবাজারের সদর উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে অবৈধভাবে বসবারতদের মধ্যে দু’শ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমারের নাগরিক হয়েও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি বিভিন্ন দফতরের সহযোগিতায় জাতীয়তা সনদ, জন্ম নিবন্ধন সনদ, জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি), স্মার্টকার্ড, ভূমিহীন প্রত্যয়নপত্র, স্কুলের প্রত্যয়নপত্র পেয়েছেন এবং ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মামলার আসামি হিসেবে থাকা ১৩ জন ২০১৮-২০১৯ সালের মধ্যে এনআইডি ও স্মার্টকার্ড পান এবং ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির স্বাক্ষরে জমা দেওয়া জাতীয়তা সনদ ও জন্ম নিবন্ধন সনদ সঠিক কি না সেটা যাচাই না করেই তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বাসিন্দারা তাদের নিজেদের আত্মীয়স্বজন হিসেবে উল্লেখ করেন, কিন্তু সেটাও যাচাই করা হয়নি। নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনবিহীন একটি ল্যাপটপ থেকে তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এরপর পাসপোর্টের আবেদন করা হলেও সেটাও পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে যথেষ্ট যাচাইবাছাই ছাড়াই প্রত্যয়ন করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৬, ৪৭১, ১০৯ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২-এর উপ সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, আসামিরা একে অপরের সহযোগিতায় অবৈধভাবে ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা নাগরিকদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে, প্রতারণার আশ্রয়ে ভুয়া পরিচয়, নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তারা শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এ বিষয়ে অনুসন্ধান শেষে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সুপারিশ করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার দুদক কর্তৃপক্ষ মামলা করার অনুমতি দিলে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

উল্লেখ, গত চারদিনে রোহিঙ্গাদের জাতীয়তা সনদ, জন্ম নিবন্ধন সনদ, জাতীয় পরিচয় পত্র দেওয়া ও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং পাসপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে মোট ৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলার এজাহারে উল্লেখ আছে, নির্বাচন কমিশনের খোয়া যাওয়া একটিসহ কয়েকটি ল্যাপটপ ব্যবহার করে ৫৫ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গাকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বিএনএনিউজ/মনির

Loading


শিরোনাম বিএনএ