20 C
আবহাওয়া
২:৪৩ পূর্বাহ্ণ - ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » রাবিতে নানা আয়োজনে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত

রাবিতে নানা আয়োজনে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত


বিএনএ, রাবি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে উদযাপন করা হয়েছে মহান বিজয় দিবস। শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে প্রশাসন ভবনসহ অন্যান্য ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

সকাল ৭:১৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার শহীদ মিনারে ও সকাল ৭:৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে এবং সকাল ৭:৪৫ মিনিটে বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।

সকাল ১০টায় সাবাস বাংলাদেশ চত্বরে বিএনসিসি, রোভার স্কাউট, রেঞ্জারের প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উপাচার্য এই প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। এসময় উপ-উপাচার্যবৃন্দ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

সকাল ১০:৪৫ মিনিটে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত হয় স্মৃতিচারণ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা প্রদান এবং আলোচনা। উপাচার্য ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শুভেচ্ছা জানান ও সম্মাননা স্মারক ক্রেস্ট উপহার দেন। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. অবায়দুর রহমান প্রামানিক।

অনুষ্ঠানে আলোচক মফিদুল হক আলোচনার শুরুতেই সকল শহীদ শিক্ষকদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা প্রতিষ্ঠার চেতনা, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠাকে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করে বলে উল্লেখ করেন।

মফিদুল হক বলেন, “সরকারের ভূমিকা এক্ষেত্রে ছিল অত্যন্ত দমন-পীড়নমূলক। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শুধু ভূখণ্ড বা জাতিসত্বার স্বাধীনতার জন্য ছিল না। তাতে সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির স্পৃহা অন্যতম চালিকাশক্তি ছিল। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বিশ্বের নানাপ্রান্তে অভূতপূর্ব সাড়া জাগিয়েছিলো। তিনি মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ৫০ বছর পেরিয়ে বিশ্ব বাংলাদেশকে কীভাবে মূল্যায়িত করেছে তাও উল্লেখ করেন।”

অনুষ্ঠানে রাবি উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর সহযোগিদের অমৃতদের পুত্র বলে উল্লেখ করে বলেন, “এসব ক্ষণজন্মা মনিষী ক্ষণিকের জন্য পৃথিবীতে এসে প্রভা ছড়িয়ে গেছেন। তাঁদের আলোয় আমরা আলোকিত হচ্ছি। স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এসব নেতা মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।”

তিনি আরো বলেন, “একটি জাতির ইতিহাসে ভাষা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে সেটা বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন। বিভিন্নভাবে পরিবেশ-পরিস্থিতির বিশ্লেষণে তিনি প্রত্যুৎপন্নমতিত্বের সাথে বাঙালির স্বাধীনতার স্পৃহাকে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পথে ধাবিত করেছিলেন।” যেসব মানুষ মুক্তিযুদ্ধে আত্মহুতি দিয়েছেন তাঁদের ত্যাগ ও  আদর্শের কথা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।

এছাড়া সকাল ১০:৪৫ মিনিটে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, রাবি ইউনিট কমান্ড, রাবি অফিসার সমিতি এবং সহায়ক কর্মচারী সমিতি, পরিবহন টেকনিক্যাল কর্মচারী সমিতি ও সাধারণ কর্মচারী ইউনিয়ন কর্তৃক নিজ নিজ উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

দিবসের কর্মসূচিতে আরও ছিল, সকাল ১০:৩০ মিনিটে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবন প্রাঙ্গণে স্কুল শিক্ষার্থীদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার ও  পুরস্কার প্রদান করেন উপাচার্য পত্নী অধ্যাপক তানজিমা ইয়াসমিন। বেলা ১১টা থেকে শেখ কামাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় শিক্ষক, অফিসার ও কর্মচারীদের বিভিন্ন খেলাধুলা।

এছাড়া, জুমার নামাজের পর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ দোয়া প্রার্থনা করা হয়। সন্ধ্যা ৫:৩০ মিনিটে কেন্দ্রীয় মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ক্যাম্পাসের প্রশাসন ভবন ও হলগুলো বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আলোকসজ্জিত করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আয়োজিত কর্মসূচি ছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নিজ নিজ কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করে।

বিএনএনিউজ/সাকিব/এইচ.এম।

Loading


শিরোনাম বিএনএ