বিএনএ, বিশ্বডেস্ক: পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কয়েকদিনের অস্বাভাবিক ভারী বৃষ্টি ও বজ্রপাতে অন্তত ৩৯ জন নিহত হয়েছে। সোমবার (১৫ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আগামীতে আরও বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার বিষয়েও সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি। প্লাবিত হয়ে ফসলি জমি। আকস্মিক বন্যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং পরিবহন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। বেশ কিছু ফুটেজে দেখা গেছে বৃষ্টির পানিতে কৃষিজমি ডুবে গেছে।
দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখাওয়ায় মুষলধারে বৃষ্টি এবং আকস্মিক বন্যার কারণে ভূমিধস হয়েছে। এতে বহু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং গাছ উপড়ে গেছে বলে প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। খাইবার পাকতুনখোয়া প্রদেশে সোমবার রাত পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিতে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন কৃষক গম কাটার সময় বজ্রপাতে মারা যান।
পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল এলাকা পাঞ্জাবে ভয়াবহ বন্যায় মারা গেছে অন্তত ২১ জন। শুক্র থেকে রবিবার পর্যন্ত টানা বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যা ও বজ্রপাতে নিহতের এ ঘটনা ঘটে।
বেলুচিস্তান প্রদেশে বন্যায় মারা গেছে ৫ জন। ভয়াবহ বন্যায় প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। সোম ও মঙ্গলবার প্রদেশের সব স্কুলগুলো ছুটি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আগামী কয়েক দিনে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ। ফলে আরও ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যার বিষয়ে সতর্ক করেছে পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষও।
প্রতিবেশী আফগানিস্তানেও ভারী বন্যার খবর পাওয়া গেছে। বন্যায় এখানে অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে শত শত ঘরবাড়ি।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ২০২২ সাল থেকে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে পাকিস্তান। ওই বছর বন্যায় অন্তত ১৭০০ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল। পাকিস্তানকে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য পঞ্চম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স।
উপকূলীয় শহর পাসনি এবং বালোচে বৃষ্টি পানিতে তলিয়ে গেছে। পাসনির শহরের চেয়ারম্যান নুর আহমেদ কালমাতি সংবাদমাধ্যম ডনকে বলেন, বৃষ্টির পানিতে পুরো শহরকে লেক মনে হচ্ছে। আবাসিক এবং বাণিজ্যিক ভবনে পানি ঢুকে পড়েছে।
বিএনএ/এমএফ