বিএনএ, ডেস্ক : ধর্ষণ ও নিপীড়নের শিকার মাগুরার আছিয়া গত ১৩ই মে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। তার জানাজায় অংশ নিতে পুলিশের হেলিকপ্টার যোগে মাগুরা যান জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হকসহ কয়েকজন নেতা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে তাদেরকে হেলিকপ্টার থেকে নামতে দেখা যায়। এ ছাড়া একটি কক্ষের সোফায় তাদের বসে ফোন চাপতে ও কথা বলতে দেখা যায়। এসব নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করেন অনেকেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা যায় নানামুখী তর্ক-বিতর্ক।
১৫ মার্চ দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এসব নিয়ে একটি পোস্ট দেন সারজিস আলম। ফেসবুক পোস্টে সারজিস বলেন, যখন শুনলাম আছিয়া আর নেই তখন সিএমএইচে ছুটে গিয়েছি।
সেনাবাহিনী, র্যাব থেকে পরিবারের জন্য বরাদ্দকৃত হেলিকপ্টারে যখনই একাধিক সিট খালি থাকার কথা শুনেছি, তখনই মাগুরায় গিয়ে আছিয়ার জানাজায় অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছি এবং জানাজা পড়ে আবার ঢাকায় ব্যাক করেছি।
নেটিজেনদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে সারজিস বলেন, এই পুরো ঘটনার মধ্যে সর্বশেষ অংশটুকু আমি ফেসবুকে দিয়েছি এবং ফেইসবুকে দেয়া অংশটুকু কে ‘সামগ্রিক’ মনে করে মিডিয়া এবং কিছু পাবলিক জাজমেন্ট করা শুরু করলো। তার মানে আমরা যতটুকু সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা গণমাধ্যমে প্রকাশ করি ততটুকুই, হচ্ছে বলে আপনারা মনে করেন এবং সেটাকে পুরো ঘটনা ধরে জাজমেন্ট শুরু করেন। অর্থাৎ আপনারাও আসলে ফুটেজের দিকেই তাকিয়ে থাকেন। আবার যদি কোনো কিছু না দেই তখন মনে করেন কিছুই করা হয়নি! কি অদ্ভুত!
সারজিস অভিযোগ করে বলেন, দিলে বলেন ফুটেজমুখী আর না দিলে বলেন কিছুই করেনি। আপনাদের এই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড কবে একটা সিঙ্গেল স্ট্যান্ডার্ডে পরিণত হবে?
একটি মিডিয়ার অপেশাদারিত্বের অভিযোগ তুলে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের এ সংগঠক বলেন, আছিয়ার জানাজা ছিল সন্ধ্যা সাতটায়। আমরা পৌঁছেছি সাড়ে পাঁচটায়। এই দেড় ঘণ্টা একটা ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করেছি। তার মধ্যে কয়েক মিনিট হয়তো ফোনের নোটিফিকেশন চেক করেছি। ঠিক ওই সময়ে কেউ ছবি তুলল এবং কালের কণ্ঠ একাধিকবারের মতো এবারও অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে তাদের অনলাইন পোস্টারে সেটা প্রকাশ করল। পাশাপাশি এমনভাবে দেখালো যে আমরা মনে হয় পুরো সময় বসে শুধু ফোনের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। চাইলেই কিন্তু তারা ওখানে বসে থাকার অন্য সময়ের নরমাল কোনো ছবি ব্যবহার করতে পারত। কিন্তু কিছু রিঅ্যাকশন বেশি পাওয়ার আশায় সেটা তারা করেনি।
নিজের বিবেককে প্রশ্ন করার আহ্বান জানিয়ে সারজিস বলেন, দেড় ঘণ্টা কোথাও বসে থাকলে অন্তত কয়েক মিনিট আপনারা ফোনের নোটিফিকেশন চেক করতেন কি না? যদি করেন তাহলে আপনাদের এই ভিউখোর মনোভাব বন্ধ হবে কবে? কবে পেশাদারিত্বের পরিচয় দেওয়া শুরু করবেন?
সৈয়দ সাকিব