30 C
আবহাওয়া
১১:৪২ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ১৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের মৃত্যুবার্ষিকীতে রাবি প্রশাসনের শ্রদ্ধা

কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের মৃত্যুবার্ষিকীতে রাবি প্রশাসনের শ্রদ্ধা

কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের মৃত্যুবার্ষিকীতে রাবি প্রশাসনের শ্রদ্ধা

বিএনএ, রাবি : উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর রাজশাহী শহরে নিজ বাসভবনে ৮২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন এ কথাসাহিত্যিক৷ বিশিষ্ট এই কথাসাহিত্যিকের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসন।

মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে তার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাবি উপাচার্য ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার। পরে সেখানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শ্রদ্ধা জানানোর পর দর্শন বিভাগসহ অন্যান্য সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন অধ্যাপক হাসান আজিজুল হকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুস্পস্তবক অর্পণ করে।

এদিকে, বেলা সাড়ে ১১টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ অনুষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডের সঞ্চালনায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাবির বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে এই স্মরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক (অব.) মো. অবায়দুর রহমান প্রামানিক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলা কথাসাহিত্যে অধ্যাপক হাসান আজিজুল হকের অবদানের কথা স্মরণ করে বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা বলেন, “অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক চলার পথে যে মানবিক যন্ত্রণা পেয়েছেন তা তাঁর সাহিত্যকর্মের মধ্য দিয়ে ফুঁটে উঠেছে। তিনি তাঁর লেখনীর মাধ্যমে একজন নিগৃহীত মানুষকে মানবিক বাস্তবতায় ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’—এ বাক্যটিকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন তাঁর লেখনীর মাধ্যমে।”

রাবি উপাচার্য ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, “কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক যে বিশাল প্রতিভার অধিকারী ছিলো তা এক স্মরণ অনুষ্ঠানের সীমিত পরিসরে বলে শেষ করা যাবে না। বাংলা কথাসাহিত্যের বরপূত্র হাসান আজিজুল হক যখনই প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছেন, তিনি তখনই তার বিরুদ্ধে লিখেছেন। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে যে কয়েকজন বাংলা সাহিত্যে ক্ষুরধার লেখনী চর্চা করেছেন তিনি ছিলেন তাঁদের অন্যতম। তাঁর অসাধারণ ভাষাশৈলী, বিষয়বস্তুকে সহজবোধ্য করে তুলে ধরা, জীবনঘনিষ্ঠ বিষয়বস্তু নির্বাচন এসবই তাঁর কর্মকে বিশিষ্টতা দিয়েছে। তাঁর মৃত্যু আমাদের সাহিত্যঙ্গণে অসীম শুন্যতার সৃষ্টি করেছে। হাসান আজিজুল হককে জানতে ও বুঝতে হলে তাঁর কর্ম নিয়ে নিবিড় গবেষণা প্রয়োজন।”

অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালে ভারতের বর্ধমান জেলার যব গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৮ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতক এবং ১৯৬০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং ২০০৪ সালে ৩১ বছর অধ্যাপনার পর অবসরগ্রহণ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পূর্বে ১৯৬০ সাল থেকে তিনি কয়েকটি কলেজে শিক্ষকতা করতেন। তিনি ২০০৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ হিসেবে যোগদান করেন।

অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি অসংখ্য গল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ লিখে গেছেন। তাঁর রচিত জনপ্রিয় গল্পগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘সমুদ্রের স্বপ্ন শীতের অরণ্য’, ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’, ‘জীবন ঘষে আগুন’, ‘নামহীন গোত্রহীন’, ‘পাতালে হাসপাতালে’, ‘আমরা অপেক্ষা করছি’, ‘রোদে যাবো’, ‘রাঢ়বঙ্গের গল্প’ ইত্যাদি। আগুনপাখি ও শামুক যথাক্রমে তাঁর রচিত প্রথম ও শেষ উপন্যাস। তাঁর লেখা গল্পসমূহ হিন্দি, উর্দু, রাশিয়ান ও জাপানিজ ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি।

বিএনএ/সাকিব, এমএফ

Loading


শিরোনাম বিএনএ