বিএনএ, বিশ্বডেস্ক: সোমবার (১৩ অক্টোবর) মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ উদ্যোগে মিশরের পর্যটন নগরী শারম আল-শেখে অনুষ্ঠিত হলো বহুল প্রতীক্ষিত ‘শারম আল-শেখ শান্তি সম্মেলন’। এ সম্মেলনে মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা ও রক্তক্ষয়ী গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ঐতিহাসিক এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেন বিশ্বের শীর্ষ নেতারা।
এই ঐতিহাসিক সম্মেলনের সহ-সভাপতিত্ব করেন মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি, জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা, এমনকি চীনের বিশেষ দূতও। মোট ৩৫ জন বিশ্বনেতা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধির উপস্থিতিতে এই ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে মিসরের প্রেসিডেন্ট আল-সিসি বলেন, “আজ আমরা এমন এক মুহূর্তের সাক্ষী হচ্ছি, যা শুধু মধ্যপ্রাচ্যের জন্য নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য আশার প্রতীক হয়ে থাকবে।”
চুক্তি স্বাক্ষরের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ভাষণে বলেন, “আজ আমরা শুধু এক যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাইনি, আমরা মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যতকে নতুন করে লিখছি। এটি হবে এমন এক চুক্তি, যা শান্তির নতুন ভোর এনে দেবে—যে ভোরে রক্তের বদলে সহযোগিতা, ঘৃণার বদলে সহমর্মিতা প্রতিষ্ঠিত হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমি নিশ্চিত—এই চুক্তি টিকে থাকবে, কারণ আজ যারা এখানে উপস্থিত, তারা কেবল স্বাক্ষর করেননি, বরং শান্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।”
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, “এই চুক্তি আমাদের যুগের সবচেয়ে বড় মানবিক সঙ্কটের অবসান ঘটানোর সুযোগ এনে দিয়েছে। এখনই সময়, প্রতিশোধ নয়—পুনর্গঠন ও পুনর্মিলনের।”
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, “গাজার শিশুরা আজ থেকে হয়তো নতুন ভোর দেখবে, যেখানে আকাশে আর ড্রোন নয়, উড়বে পায়রা।” অন্যদিকে কাতারের আমির শেখ তামিম শান্তি প্রতিষ্ঠায় আরব বিশ্বের ঐক্যকে ‘মাইলফলক’ হিসেবে আখ্যা দেন।
অনুষ্ঠান শেষে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রনেতারা একে অপরের সঙ্গে করমর্দন করে শান্তির প্রতীক হিসেবে একটি জলপাই চারা রোপণ করেন।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি, রয়টার্স।
বিএনএ/শাম্মী
