বিএনএ ডেস্ক :স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করেন।
বাবুল আক্তার ছাড়া অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- মো: কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ ভোলো, মো: মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো: আনোয়ার হোসেন, মো: খাইরুল ইসলাম কালু ও শাহজাহান মিয়া।
অন্যদিকে, মিতু খুনের মামলায় গ্রেপ্তার চারজনকে অভিযোগপত্রে অব্যাহতি দিয়েছে পিবিআই।তারা হলেন- মো: সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কু, নুরুন্নবী, রাশেদ ও গুইন্যা
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, স্ত্রী মিতু হত্যা মামলায় বাবুল আক্তারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছি।সেই সঙ্গে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
চার্জশীটের চূড়ান্ত প্রতিপাদ্যে উল্লেখ করা হচ্ছে, সাবেক এসপি বাবুল আক্তার বিদেশী এনজিও কর্মকর্তা জনৈক গায়ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার কারণে সৃষ্ট গৃহবিবাদে অতিষ্ঠ হয়ে ৩ লাখ টাকার কনট্রাক্টে ভাড়াটিয়া খুনী দিয়ে অর্থাৎ তার বিশ্বস্ত সোর্স মুসার নেতৃত্বে স্ত্রী মিতুকে সুপরিকল্পিতভাবে খুন করিয়েছে। তদন্তে এটা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
পিবিআই সূত্রে জানিয়েছে, শুরু থেকে আড়াই বছর ধরে এই হত্যাকান্ডের সর্বশেষ তদন্তে পিবিআই নিশ্চিত হয়েছে বাবুল আক্তারই এই হত্যাকান্ডের মাস্টারমাইন্ড। এতে করে বাবুল আক্তার তার নিজের দায়ের করা মামলাতেই অভিযুক্ত হয়েছেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। স্ত্রী খুনের ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ২০১৬ সালের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
ঘটনার পরের বছর মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন প্রথম এই খুনে বাবুলের জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ্যে আনেন। এরপর ২০২০ সালের শুরুতে বাবুলের করা মামলার তদন্তভার পড়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ওপর। এরপর আস্তে আস্তে জট খুলতে থাকে চাঞ্চল্যকর এই মামলার।
২০২১ সালে পিবিআইর তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের লক্ষ্যে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দাখিলের পর ১২ মে মিতুর বাবা বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই দিনই বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।
এদিকে, গত ৮ সেপ্টেম্বর পিবিআই হেফাজতে থাকার সময় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দাবি করে সংস্থাটির প্রধান বনজ কুমার মজুমদারসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলার আবেদন করেছেন বাবুল আক্তার। চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালতে মামলার আবেদন করেন তিনি।
বিএনএ/ ওজি