বিএনএ, ঢাকা: অবৈধভাবে লিবিয়া গিয়ে আটক, বিপদগ্রস্ত ও পাচারের শিকার ১৭৬ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৯ হাজারেরর বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে দেশে ফেরত আনা হয়েছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৩র্মাচ) আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহযোগিতায় বুরাক এয়ারের একটি ফ্লাইটে ভোর সোয়া ৪টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তাঁরা। ইমিগ্রেশন ও তদন্ত শেষে সকাল ৮টায় বের হন সবাই। আগামী ১৯ ও ২৬ মার্চ আরো দুটি ফ্লাইট তিন শতাধিক বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস।
দূতাবাস জানায়, লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস ধারাবাহিক ও সমন্বিত প্রচেষ্টায় ১৭৬ জন বাংলাদেশি নাগরিককে আইওএম এর সহযোগিতায় দেশে পাঠিয়েছে। তাদের মধ্যে ১০৬ জন ত্রিপলীর তাজুরা ডিটেনশন সেন্টারে আটক ছিলেন এবং অবশিষ্ট ৭০ জন বিপদগ্রস্ত অবস্থা থেকে স্বেচ্ছায় দেশে ফিরেছেন। এদের মধ্যে ১২জনকে শারীরিকভাবে অসুস্থ দেখা গেছে।
দেশে ফিরে প্রিয়জনকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। কেউ বছর, কেউ আবার মাসের পর মাস অপেক্ষা শেষে ফিরে এসেছে । এ কান্না যেন তাদের আনন্দের। এরমধ্যে ১০৬ জন ছিলেন ত্রিপলীর তাজুরা ডিটেনশন সেন্টারে। তারা তুলে ধরেছেন সেখানে হওয়া ভয়াবহ নির্যাতনের কথা। লিবিয়ায় বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আটকে থাকা বাকি বাংলাদেশিদের দ্রুত ফিরিয়ে আনা ও দালালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি ভুক্তভোগীদের।
এক ভুক্তভোগী প্রবাসী বলেন, গত চার মাসের মধ্যে দুই বেলা ভাত খেতে পাইনি। ভাত দেয়নি। শুধু মেরেছে। মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন সহ্য করে সাক্ষাৎ মৃত্যু থেকে বেঁচে ফিরেছি।
আরেকজন জানান, লিবিয়ায় যেন কেউ না যায়। সেখানে আমাকে মাফিয়া ধরেছিল, মোট ২৬ লাখ টাকা নিয়ে গেছে আমার। ৫ মাস ৯ দিন জেল খেটেছি। কথা বলতে কষ্ট হয় আমার।
একজন ভুক্তভোগী জানান, ৫ মাস কাজ করেছি কিন্তু এক মাসের বেতন দিয়েছে। তাও আবার বাংলাদেশি টাকায় ৩০ হাজার। আর দেয়নি। খাওয়া দাওয়ার খুবই কষ্ট, বাইরে বের হলে আবার মাফিয়া ধরে। সবদিক থেকেই সমস্যা।
বিএনএনিউজ/ আরএস/শাম্মী