35 C
আবহাওয়া
১০:৩৭ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ঢামেকে এমআরআই পরীক্ষা বন্ধ

ঢামেকে এমআরআই পরীক্ষা বন্ধ

ঢামেক

বিএনএ, ঢাকা : ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগটি ধিরে ধিরে অকেজো হয়ে পড়ছে। এই বিভাগের এমআরআই দুটি মেশিন দীর্ঘদিন যাবত নষ্ট থাকায় রোগীদের এমআরআই পরীক্ষা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। আর সারা হাসপাতালে একটি মাত্র সিটি স্ক্যান মেশিন।

বহির্বিভাগের এমআরআই মেশিন করোনা মহামারির সময় নষ্ট হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সেটা চালু হয়নি। হাসপাতালের নতুন ভবনে থাকা মেশিনটি ১১ দিন ধরে নষ্ট।  এমআরআই পরীক্ষা থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত হাসপাতালের রোগীরা। এই সুযোগে বর্হিরাগত ডায়গনিস্টিকের দালালরা হাসপাতাল থেকে কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের সহযোগিতায় রোগীদের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে তাদের স্বজনদের অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে।

এ ছাড়া হাসপাতালে দুটি সিটি স্ক্যান মেশিন যেখানে প্রতিদিন ১৬০ থেকে ১৭০ রোগীর সিটি স্ক্যান করা হয়। এ দুটি সিটি স্ক্যান মেশিনের মধ্যে নতুন ভবনের নিচতলায় থাকা এমআরআই মেশিনের মতো একটি  ১১ দিন ধরে নষ্ট হয়ে আছে। সিটি স্ক্যান মেশিন টেকনিশিয়ানরা মেরামত করার চেষ্টা করছেন। অপরদিকে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে এমআরআই মেশিন। জরুরি বিভাগের সিটি স্ক্যান মেশিন ২৪ ঘণ্টা অনবরত সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে রোগীদের।

সিটি স্ক্যান মেশিন নষ্ট থাকার কারণে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত মা আমেনা বেগমকে ভর্তি করাতে পারছে না তার মেয়ে সুলতানা আক্তার। কারণ সিটি স্ক্যানের পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে হাসপাতালে ভর্তি নেবে আমেনা বেগমকে বলেছেন চিকিৎসকরা। তারা জানেনা যে জরুরি বিভাগে অপর একটি সিটি স্ক্যান মেশিন চালু আছে।  না জানার কারণে তিনদিন যাবত ক্যান্সার আক্রান্ত মাকে নিয়ে হাসপাতালে ফ্লোরে অবস্থান করছেন।

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলের দিকে হাসপাতালের নতুন ভবনের নিচতলায় গিয়ে সিটি স্ক্যান রুমটি বন্ধ থাকতে দেখা যায়। তবে ভেতরে কোম্পানির লোকজন সেটা মেরামতের কাজ করতে দেখা যায়। একই রুমে রয়েছে এমআরআই মেশিন।

সেখানে সিটিস্ক্যানের অপেক্ষায় থাকা হাসপাতাল থেকে পরীক্ষার কাগজ নিয়ে সুলতানা জানান, ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত শেরপুর সদর এলাকা থেকে মাকে নিয়ে ৪দিন হয় হাসপাতালে আসি। চিকিৎসকদের পরামর্শে কাগজ নিয়ে সিটি স্ক্যান করতে এসে দেখে সেই রুম বন্ধ। তার কাছে জানতে পারি সিটি স্ক্যান মেশিন নষ্ট। কারণ রিপোর্ট দেখে তার মাকে ভর্তি নেওয়া হবে। তা না হলে  চিকিৎসা শুরু হবে না। তিনদিন যাবত সিটি স্ক্যান করার জন্য হাসপাতালে বসে আছি মাকে নিয়ে। আজকে জানতে পারলাম ইমারজেন্সিতে সিটি স্ক্যান হয়। অথচ নতুন ভবনের নিচতলার সিটি স্ক্যান রুমের দরজায় কোনো নির্দেশনা লেখা নেই। থাকলে জানতে পারতাম জরুরি বিভাগে সিটি স্ক্যান চালু রয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে রেডিওলজি বিভাগের সিনিয়র টেকনোলজিস্ট মো. কামাল উদ্দিন জানান, নতুন ভবনের নিচতলার ২ ফেব্রুয়ারি থেকে এমআরআই ও সিটি স্ক্যান মেশিনটি নষ্ট। গত ২০১৭ সালে মেডিটেল প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি কোম্পানির থেকে এটা কেনা হয়েছিল। এই মেশিন দুটি পাঁচ বছরের ওয়ারেন্টির সময় অতিক্রম করেছে। তবে কোম্পানির লোকজন কাজ করছে শুধু সিটি স্ক্যান মেশিনটি সচল করার জন্য। এমআরআই মেশিন চালু করা সম্ভব না বলে ইঞ্জিনিয়াররা জানান। আর বহির্বিভাগে আগে আরও একটা এমআরআই মেশিন ছিল। সেটা করানোর সময় নষ্ট হয়েছে। এখনো সেরকমই রয়েছে। হাসপাতালে  রোগীদের এমআরআই পরীক্ষা পুরোপুরি বন্ধ। আর জরুরি বিভাগের সিটি স্ক্যান ২৪ ঘণ্টাই পুরোদমে চলছে। এই ভাবে একেধারে চলতে থাকলে সেইটাও নষ্ট হতে পারে। এই সব মেশিন নষ্ট থাকার কারনে যেমন রোগীরা হয়রানি শিকার হচ্ছেন। তেমনি সরকার কোটি টাকার রাজস্ব হারাছেন।

হাসপাতালে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন,  দুটি মেশিনের ওয়ারেন্টি শেষ। সিটি স্ক্যান মেশিনটি চালু করার জন্য ইঞ্জিনিয়াররা কাজ করছে। তবে সেই ইঞ্জিনিয়াররা বলেছে, এমআরআই মেশিনটি আর চালু করা সম্ভব নয়। হাসপাতালে রোগীদের জন্য এমআরআই পরীক্ষা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। তবে জরুরি বিভাগে সিটি স্ক্যান মেশিনটি চালু আছে। রোগীদের পরীক্ষা হচ্ছে। নতুন এমআরআই মেশিনের জন্য ডিমান্ড দেওয়া হয়েছে। আর বহির্বিভাগের এমআরআই মেশিনটি করোনার সময় থেকে নষ্ট হয়ে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নতুন ভবনের সিটি স্ক্যান রুমের দরজায় নির্দেশনা টাঙিয়ে দেওয়া নির্দেশ দিয়েছি। মেশিন নষ্ট থাকায় রোগীদের একটু কষ্ট হচ্ছে।

বিএনএনিউজ/আজিজুল/এইচ.এম।

Loading


শিরোনাম বিএনএ