27 C
আবহাওয়া
৭:২৫ অপরাহ্ণ - মার্চ ২৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » রাবিতেও “লাঞ্চের পর আসেন” বিড়ম্বনা

রাবিতেও “লাঞ্চের পর আসেন” বিড়ম্বনা


বিএনএ, রাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদেরও বিভিন্ন একাডেমিক ও হল সংশ্লিষ্ট কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রতিনিয়ত শুনতে হয় “লাঞ্চের পর আসেন” অজুহাতটি। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন এবং হল অফিসগুলোতে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পান না বলেও অভিযোগ রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন হলের আবাসিক ফি, ফর্ম পূরণ কিংবা সার্টিফিকেট উত্তোলনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা নানা ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন বলে জানা গেছে। সেমিস্টার কিংবা ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষার আগে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ফরম পূরণের জন্য বিভাগের চেয়ারম্যান এবং আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষের স্বাক্ষরের প্রয়োজন হয়। সেজন্য বিভাগ এবং হল অফিসে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে একটি স্বাক্ষরের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। সকালে অফিসে গেলে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অফিস থেকে জানানো হয়—”লাঞ্চের পর আসেন”। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে এসেও বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পূর্ণাঙ্গ ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আসে নি। ফলে শিক্ষার্থীদের নানা ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর সেমিস্টার ফাইনালের ফর্মপূরণের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে সংবাদ প্রকাশ। সেখানে দেখা যায়, সেই শিক্ষার্থীকে প্রথমে অনলাইনে লগইন করে পরীক্ষাসংক্রান্ত কোর্সের নাম, কোড ইত্যাদি তথ্য পূরণ করে, তা প্রিন্ট করতে হয়। ব্যাংকে পরীক্ষার ফি প্রদান করার পর, সেই প্রিন্ট কপিতে স্বাক্ষর করে থাকেন বিভাগের সভাপতি ও হল প্রাধ্যক্ষ। কিন্তু দুটি স্বাক্ষরের জন্য সেই শিক্ষার্থীকে পাঁচ দিন অপেক্ষা করতে হয়েছে।

করোনার সময় বিভিন্ন বর্ষের ভর্তিসংক্রান্ত সকল কার্যক্রম অনলাইনের আওতায় নিয়ে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু একাডেমিক বিভিন্ন কার্যক্রমে এখনও ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া লাগেনি।

অন্যদিকে, সার্টিফিকেট ও মার্কশীট উত্তোলনের ক্ষেত্রে রাবি শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তির স্বীকার হতে হয় বলে জানা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অফিস চলাকালীন সময়েও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা অনুপস্থিত থাকেন; কাজে ধীরগতি তো আছেই। কিছু শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, রেফারেন্স কিংবা পরিচিত কেউ না থাকলে সার্টিফিকেট ও মার্কশীট উত্তোলনে ১০ থেকে ১৫ দিনও লেগে যায়।

শিক্ষার্থীদের এমন বিড়ম্বনার বিষয়টি স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. বাবুল ইসলাম বলেন, “আমরা ফর্ম ফিলআপ-এর সিস্টেমটি নিয়ে কাজ করছি। আপনারা দেখেছেন, বিভিন্ন বর্ষে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের বিভাগ বা হল কর্তৃপক্ষের কোনো স্বাক্ষরের প্রয়োজন পড়ে না৷ আশা করছি, দ্রুতই আমরা শিক্ষার্থীদের এই ভোগান্তি নিরসন করতে পারবো। তারা ঘরে বসেই সকল একাডেমিক কাজ সম্পন্ন করতে পারবে।”

“লাঞ্চের পর আসেন” বিড়ম্বনাকে “অন্যায়” বলে আখ্যায়িত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব ইংলিশ এন্ড আদার ল্যাঙ্গুয়েজেজ-এর পরিচালক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, “এটা স্রেফ একটা অন্যায়; সেটা কোনো শিক্ষকই করুক বা কোনো কর্মকর্তা। এই যুগে এসেও দুটো স্বাক্ষরের জন্য একজন শিক্ষার্থীর এমন বিড়ম্বনা কোনোভাবেই কাম্য নয়।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, “আমরা কখনোই চাইনা আমাদের একজন শিক্ষার্থী এমন বিড়ম্বনার স্বীকার হোক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একাডেমিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ অনলাইনের আওতায় নিয়ে আসার কাজ করছে। তবে শিক্ষার্থীদের আমি বলবো, কেউ যদি এসব বিড়ম্বনার স্বীকার হয়, আমাদেরকে লিখিত অভিযোগ জানানোর জন্য। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিএনএ/সাকিব,এমএফ

Loading


শিরোনাম বিএনএ