বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলায় তিন আসামির বিদেশযাত্রা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। সোমবার ( ১২ জুলাই) বিকেলে পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমান শুনানি শেষে এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
নিষেধাজ্ঞা পাওয়া আসামিরা হলেন— মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ ওরফে হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া ও মো. খাইরুল ইসলাম কালু। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশটি যথাযত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দেশের সব স্থল ও বিমানবন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে পিবিআই পরিদর্শক (মেট্রো) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, তিন আসামিকে আমরা গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। তারা যাতে বিদেশে পালাতে না পারেন, সে ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আমরা গত ৫ জুলাই আদালতে আবেদন করি। আজ (সোমবার) সেই আবেদনের শুনানি হয়েছে। আদালত তিনজনের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
তিন আসামির মধ্যে কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা বাবুলের স্ত্রী মিতুকে কিলিং মিশনের নেতৃত্বদাতা হিসেবে অভিযুক্ত। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই নিখোঁজ আছেন মুসা। তবে তার স্ত্রী পান্না আক্তারের দাবি, মুসাকে হত্যাকাণ্ডের ১৭ দিন পর প্রশাসনের লোকজন তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ মিলছে না। তদন্তে বেরিয়ে এসেছিল, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা ইউনিটে কর্মরত থাকার সময় বাবুল আক্তারের সোর্স ছিলেন মুসা। গত ৩১ মে পান্না আক্তার আদালতে এ মামলার সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন।
উল্লেখ, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার ওআর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ওই বছরের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। এরপর মামলার তদন্তে গতি আসে। ১৫ মাস পর গত ১১ মে বাদী বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেয় পিবিআই। তবে এর আগেই ঘটনার সঙ্গে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন তদন্তসংশ্লিষ্টরা। পরদিন আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয় বাবুল আক্তারের মামলার।
এরপর মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে নতুনভাবে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আরও ৭ জন আসামি আছেন। এরা হলেন- মো. কামরুল ইসলাম সিকদার ওরফে মুসা (৪০), এহতেশামুল হক ওরফে হানিফুল হক ওরফে ভোলাইয়া (৪১), মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম (২৭), মো. আনোয়ার হোসেন (২৮), মো. খায়রুল ইসলম ওরফে কালু (২৮), সাইদুল ইসলাম সিকদার (৪৫) ও শাহজাহান মিয়া (২৮)। এই মামলাও তদন্ত করছে পিবিআই। গত ১৭ মে থেকে কারাগারে আছেন বাবুল।
বিএনএনিউজ/মনির
Total Viewed and Shared : 16