বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) কারখানা বন্ধ ঘোষণার পর মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন প্যাসিফিক জিন্সের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক ক্যাজুয়েলসের শ্রমিকরা। বন্ধ ঘোষণায় শ্রমিকদের একটি পক্ষ ক্ষুব্ধ, আরেকটি পক্ষ দাবি-দাওয়া বিবেচনার দাবি জানিয়েছে।
সোমবার (১০ জানুয়ারি) এনিয়ে দুপক্ষে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের একটি পক্ষ আবারো সড়ক অবরোধে নেমেছে।
এর আগে সকালে কারখানার সামনে অন্তত চারশ শ্রমিক দুপক্ষে ভাগ হয়ে মুখোমুখি অবস্থান নেন। তাদের হাতে ছিল ইট-পাটকেল ও লাঠিসোঁটা। একপর্যায়ে তারা একে অপরকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়ে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের আরেকটি অংশ বলছে, মালিকপক্ষ গতমাসে অনেক দাবি-দাওয়া মেনে নিয়েছে। আপত্তি থাকলে গতমাসেই মীমাংসার প্রয়োজন ছিল। প্রতিমাসে আন্দোলন করলে মালিকপক্ষ তো ক্ষুব্ধ হবেই।
প্যাসিফিক ক্যাজুয়েলস ইউনিট-২ এর কাটিং সেকশনের শ্রমিক মো. সাকিব বলেন, ‘আমরা কাটিং সেকশন থেকে আমাদের বাড়তি ডিউটির জন্য ওভারটাইম দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। আমরা চাই মালিকপক্ষ রাগের মাথায় পুরো কারখানা বন্ধ না করে আমাদের দাবিগুলো ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করুক।’
কোয়ালিটি সেকশনের শ্রমিক সোবাহান বলেন, ‘খানে মালিকপক্ষ গত মাসে যা বাড়ানোর তা বাড়িয়েছে। তখন যাদের আপত্তি ছিলো, তারা সেটি মীমাংসা করেনি কেন। প্রতিমাসে আন্দোলন করলে কোনো মালিকই তা মেনে নেবে না। তাই অন্য কারখানা স্টাফরা তাদের গন্ডগোল করার সুযোগ দেয়নি।’
রবিবার (৯ জানুয়ারি) খাদ্য ভাতা, চিকিৎসা ভাতাসহ বিভিন্ন বাড়তি সুবিধার দাবিতে বিক্ষোভ করেন প্যাসিফিক ক্যাজুয়েলসের শ্রমিকেরা। একপর্যায়ে সেখানে কয়েকজন কর্মকর্তা এসে তাঁদের আশ্বস্ত করেন। তবে শ্রমিকেরা এ সময় তাঁদের ওপর চড়াও হন। এরপর রাতে কারখানার মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপকের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে মালিকপক্ষ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শ্রমিক কর্তৃক কারখানায় অবৈধভাবে কাজ বন্ধ রাখা এবং অন্যায় দাবিদাওয়া উত্থাপন করার কারণে ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৯ ধারা ১২(১) অনুযায়ী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত কারখানার সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সুলাইমান বলেন, ঘটনাস্থলে আমাদের টিম রয়েছে। সমাধানের চেষ্টা চলছে।
বিএনএনিউজ/ নাবিদ