28 C
আবহাওয়া
২:৩৭ পূর্বাহ্ণ - মার্চ ১৫, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের আয়না ঘরে কী ছিল?

ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের আয়না ঘরে কী ছিল?


বিএনএ ডেস্ক : ভারতে পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনা ৫ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টায় অনলাইন ভাষণ দিবেন—এমন ঘোষণার পরপরই তা প্রতিহত করতে তৎপর হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণ অভ্যুত্থানে, শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠনটি, ৬ মাস পর শেখ হাসিনার এই ভাষণকে ‘রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের বার্তা’ হিসেবে দেখে।

৫ ফেব্রুয়ারি সংগঠনটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এক ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, “হাসিনাকে বক্তব্য প্রকাশের সুযোগ দেওয়াকে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী জনগণের বিরুদ্ধে ভারতের যুদ্ধ হিসেবে দেখি।” একই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ফেইসবুকে আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, “আজ রাতে বাংলাদেশ, ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে।”

এর আগেই বিকেলে আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ইলিয়াস হোসাইন ও পিনাকী ভট্টাচার্য ফেইসবুকে ‘ধানমণ্ডি ৩২ অভিমুখে বুলডোজার মিছিল’ ঘোষণা করেন।

একটি ফটোকার্ড শেয়ার করেন এই দুই কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। তাতে বলা হয়, “হাজারো ছাত্রজনতার ওপর গণহত্যা চালিয়ে দিল্লি পালিয়ে গিয়ে সেখান থেকেই খুনি হাসিনার বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতার প্রতিবাদে ২৪-এর বিপ্লবী ছাত্র জনতার উদ্যোগে বুধবার রাত ৯টায় এই কর্মসূচি পালিত হবে।”

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ শুরু হওয়ার আগেই সন্ধ্যা ৭টার দিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শাহবাগ থেকে মিছিল নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু যাদুঘরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে রাত ৮ টার আগে হাজার হাজার ছাত্র জনতা উপস্থিত হয়। তারা আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নানা শ্লোগান দেয়।

এক পর্যায়ে ৩২ নম্বরের গেইট ভেঙ্গে হাজার হাজার ছাত্র জনতা প্রবেশ করে গণ লুটপাট চালায় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। এদের একজন দোতালায় লিখে দেয় ‘৩২ থাকবে না’। যেই কথা সেই কাজ এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে আসে সিটি করপোরেশনের ‘বুলডোজার’। রাতভর এবং পরদিন সকাল পর্যন্ত বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিজড়িত ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িটি।

বঙ্গবন্ধুর এই বাড়ির পাশেই ছিল একটি নির্মাণাধীন ভবন। বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা সেই ভবনের কয়েক তলা বেজমেন্ট দেখতে পায়। তার মধ্যে দুই তলা পর্যন্ত নামতে পারলেও পরবর্তী ফ্লোরে পানি দেখা যায়। হৈ-চৈ পড়ে যায়, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে একটি নির্মাণাধীন বাড়ির নিচে ‘আয়নাঘর’ আছে।

ওই বিল্ডিংয়ের বেজমেন্টে জমে থাকা পানির নিচে আরও ফ্লোর আছে এবং সেখানে আছে অনেক রহস্য। গণমাধ্যম গুলো তিন দিন ধরে কথিত আয়না ঘরের সংবাদ প্রচার করতে থাকে। তারা দেখাতে থাকে পানি আর পানি। সেই পানি সেচ করতে আসে মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা। তারা ৯ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে পানি সেচের কাজ শুরু করে । দুপুর পর্যন্ত পানি সেচে সেখানে আর কিছু না পেয়ে ফিরে যান। তবে জমে থাকা পানিগুলো বৃষ্টির বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ম্যানেজার মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘পানি ছাড়া তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। আমরা বেজমেন্টের পানি সেচে, লেকে ফেলেছি। পানি সেচ করার পর দেখলাম খালি যেই জায়গা আছে ৫ ফিটের মতো, সেটি লিফটের জন্য করা হয়েছে। সিঁড়ির পাশেই এই জায়গা।

পানির উৎস সম্পর্কে এই ফায়ার কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি নির্মাণাধীন ভবন। প্রথম তলার কাজ শেষ হয়নি। ছাদ পুরো খোলা। জমে আছে বৃষ্টির পানি।’

এর আগে টানা তিনদিন ধরে কথিত ‘আয়না ঘরকে’, এক নজর দেখতে হাজার হাজার উৎসুক নারী-পুরুষ, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ইলিয়াস হোসেন ও পিনাকী ভট্টাচার্য ঘোষিত বুলডোজার মিছিলে গুড়িয়ে দেয়া ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িটিতে ভিড় জমায়।

বিএনএ/ সৈয়দ সাকিব, ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ