বিএনএ, চবি: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) চলমান চারুকলার আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনায় ছাত্রলীগের কোনও কর্মীর সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) চবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মাহবুব এ রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে এসব কথা বলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অবস্থান সম্পর্কে শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ গণমাধ্যমের সঙ্গে বৈরী সম্পর্কে বিশ্বাস করে না। ছাত্রলীগ আদর্শিকভাবেই বিশ্বাস করে যে সংবাদকর্মীরা হচ্ছেন সমাজের বিবেক। ক্যাম্পাসকেন্দ্রিক যে সাংবাদিকতা, সেখানে ক্যাম্পাসের সাংবাদিকরা অবশ্যই শিক্ষার্থীদের সুবিধা, সুখ-দুঃখ হাসি-কান্নায় সার্বক্ষণিক সঙ্গী। যেমনটি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বাংলাদেশে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
তিনি আরো বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করবে এটাই সাংবাদিকতা, সাংবাদিকরা বিভিন্ন অসংগতিগুলো তুলে ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় কাজ করবে এটাই হওয়া উচিত। তাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কোনও নেতাকর্মী বা নামধারী কেউ যদি সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনও অসৌজন্যমূলক রূঢ় আচরণ করে কিংবা তাদের হেনস্তার কারণ হয় তবে অবশ্যই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বিষয়টি খতিয়ে দেখবে এবং তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগে কোনও অপরাধীর ঠাঁই নেই।
শেখ ইনান বলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে বা প্রভাব খাটিয়ে কেউ যদি এরকম করে বলে আপনার মনে হয় বা আপনাদের যেই সদস্য হেনস্তার শিকার হয়েছেন, উনি যদি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ বিষয়ে অভিযোগ করতে পারেন অবশ্যই আমরা বিষয়টি আমলে নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। অভিযোগ না দিলে কি ব্যবস্থা নেবেন না- প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই নেওয়া হবে। সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনও কর্মীর প্রাসঙ্গিকতা বা প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গতঃ এর আগে বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে বাধা দেন চবি ছাত্রলীগের বগি ভিত্তিক উপ-গ্রুপ ভিএক্স ও বাংলার মুখের অনুসারীরা। এসময় ভিডিও ফুটেজ ধারণ করায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও দৈনিক সমকালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মারজান আক্তারকে হেনস্তা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় আরটিভির ক্যামেরা পার্সন এমরাউল কায়েস মিঠুসহ উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন তারা।
এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- ভিক্স গ্রুপের অনুসারী ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী মারুফ ইসলাম। সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী মারুফ হাসান, বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী তৌহিদুল হক ফাহাদ, একই সেশনের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শহীদুর রহমান স্বপন, ইতিহাস বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমানসহ আরও ১০-১৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী।
বিএনএ/ সুমন বাইজিদ, বিএম