বিএনএ, খাগড়াছড়ি: এক সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। পাহাড় ধসের ঘটনায় মাটিরাংগার ৯১টি পরিবারসহ জেলার প্রায় পাঁচশতাধিক পরিবার ঝুঁকিতে রয়েছে। মঙ্গলবার (৮ আগষ্ট) সকালে মাটিরাঙ্গার নবীনগর এলাকায় সাদ্দাম হোসেন নামের একটি পরিবার অল্পের জন্য পাহাড় ধ্বসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে বলে জানা গেছে।
সাদ্দামের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার বলেন, সকাল ৬টার দিকে আমরা ঘরে ছিলাম। হঠাৎ করে বাঁশের ঝাড়সহ পাহাড় ধসে আমাদের ঘরের উপর পড়লে ওয়াল ভেঙ্গে খাটের উপর পড়ে। আমরা তাড়াহুড়া করে ঘর থেকে বের হয়ে যাই। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করেছেন।
এদিকে, জেলা সদরের কদমতলীস্থ সড়ক ও জনপদ বিভাগের পিছনে রেষ্ট হাউজ সংলগ্ন পাহাড় ও মো. আব্দুল মান্নানের বাড়ির পিছনে রাস্তায় ব্যাপক ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে যেকোন মুহূর্তে এ রাস্তাটি দিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। গোলাবাড়ি ইউনিয়নের কৈবল্য পিঠ নামক এলাকায় শ্রীশ্রী ত্রিপুরেশ্বরী কালী মন্দিরের পুরোহিত সমীর আর্চায্যের নামীয় সরকারি ঘরটি পাশ্ববর্তী এক নেতার পাহাড় ধসের কারণে ভেঙ্গে গেছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও ঘরের মালিক সমীর আর্চায্য।
এছাড়াও জেলা শহরের কলাবাগান, শালবাগান, মোহাম্মদপুর, সবুজবাগসহ বিভিন্নস্থানে পাহাড় ধসের খবর পাওয়া গেছে। এ সকল ঝুঁকিপূর্ণদের রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। দুর্গতদের ঘটনাস্থল হতে সরিয়ে নেয়া হয়েছে এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় সব ধরণের পুলিশি সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
অপরদিকে প্রবল বর্ষণের কারণে পাহাড়ি ঢলে ধলিয়া খাল ও গোমতি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্ক করে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হচ্ছে ঝুঁকিতে থাকা পরিবারদের। এরপরেও পাহাড় ধসের আতংক নিয়ে বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
এদিকে পাহাড় ধসের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এবং দুর্যোগ কবলিতদের জন্য সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ, অতি ঝুঁকিতে থাকা ৯১টি পরিবারের জন্য ৮টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত ও দূর্যোগ মোকাবেলায় জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজি চক্রবর্তী বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানদের তথ্যমতে, উপজেলায় ৯১টি পরিবার ঝুঁকিতে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৮টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুতসহ দূর্যোগ মোকাবেলায় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রসাশক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলায় তারা প্রস্তুত রয়েছেন।
বিএনএনিউজ/আনোয়ার হোসেন,বিএম