32 C
আবহাওয়া
৯:৫৬ অপরাহ্ণ - সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ইসলামে এতিমদের প্রতি দায়িত্ব

ইসলামে এতিমদের প্রতি দায়িত্ব

ইসলামে এতিমদের প্রতি দায়িত্ব

ইসলাম হচ্ছে দয়া ও ভালোবাসার ধর্ম, যা হৃদয়ে আশার প্রদীপ জ্বালায় এবং অসহায়দের দায়িত্ব নিতে উৎসাহিত করে। এই ধর্ম ন্যায় ও ইনসাফের শিক্ষা দেয়, এবং আল্লাহ প্রদত্ত ধন-সম্পদ ও প্রাচুর্যের মালিক হলে শুধু নিজের ও পরিবারের নয়, সমাজের দায়িত্বও পালনের নির্দেশ দেয়।

এতিম কে ?

এতিম শব্দের অর্থ নিঃস্ব এবং নিঃসঙ্গ। বাংলা অভিধান অনুসারে, যাদের পিতা-মাতা নেই, তাদের এতিম বলা হয়। ইসলামি পরিভাষায়, যে শিশুর পিতা ইন্তেকাল করেছেন, শুধুমাত্র তাকে এতিম বলা হয়। পিতা জীবিত থাকলে মাতাবিহীন শিশুকে এতিম বলা হয় না, কারণ সন্তানের লালন-পালন এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পিতার। তাই পিতা মৃত হলে শিশুকে নিঃস্ব ও নিঃসঙ্গ ধরা হয়।

মাতার অভাবেও দায়িত্ব পিতার ওপর অর্পিত থাকে, তাই মাতাবিহীন শিশুকে নিঃস্ব ও নিঃসঙ্গ বলা হয় না। সন্তান যখন বড় হয়ে যায়, তখন তাকে এতিম বলা হয় না, কারণ সে তখন স্বনির্ভর হয়ে ওঠে।

পবিত্র আল কোরআন ও হাদিসে এতিমদের প্রতি নির্দেশনা :

কুরআনে “এতিম” শব্দটি ২৩ বার উল্লেখ করা হয়েছে। সূরা আল-মাউন এতিমদের যত্ন নেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে এবং মুসলমানদের সতর্ক করে যে, যদি তারা এই আদেশকে উপেক্ষা করে, তাহলে নামাজের কোনো মূল্য নেই। এই আয়াতগুলি এতিমদের জাতিগত, বর্ণগত বা অন্য কোনো বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বিভক্ত করে না; তারা কেবল দুর্ভাগা শিশুদের উল্লেখ করে।

৬ষ্ঠ শতকের আরব সমাজে, যেখানে বংশপরিচয় ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এতিমদের প্রায়শই অবজ্ঞার চোখে দেখা হত। এই সমাজে পরিত্যক্ত শিশুদের নিম্নমানের হিসেবে গণ্য করা হত। আল্লাহ তাআলা সেই অবিচারের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রতিবাদ করেছেন এবং এতিমদের প্রতি সঠিক আচরণের নির্দেশ দিয়েছেন।

যারা এতিমদের প্রতি অবিচার করে, আল্লাহ তাদের ভর্ৎসনা করেছেন: “নিশ্চয়ই নয়, বরং তোমরা এতিমের সম্মান রক্ষা করো না।” (সূরা ফজর, আয়াত: ১৭) মক্কার কুরাইশরা এতিমদের উপর নির্যাতন করত এবং বাবার মৃত্যু পরবর্তী সম্পদ আত্মসাৎ করে নিত। আল্লাহ তাআলা সেই অনাচার নিষিদ্ধ করেছেন।

এতিম ও অনাথদের ধমকানোরও ইসলামি দৃষ্টিতে কোনো স্থান নেই। কুরআনে নির্দেশ রয়েছে: “তুমি এতিমের প্রতি কঠোর হবে না।” (সূরা দুহা, আয়াত: ৯)

ইসলামে, এতিমদের প্রতিপালন জান্নাতে যাওয়ার একটি উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। নবী করিম (সা.) বলেছেন: “যে ব্যক্তি কোনো এতিমকে নিজের পরিবারের খাবারে আমন্ত্রণ জানাবে এবং তাকে পরিতৃপ্ত করে খাবার প্রদান করবে, তার জন্য জান্নাত নিশ্চিত হয়ে যাবে।” (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ১৮২৫২)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন: “মুসলিমদের জন্য সবচেয়ে ভালো বাড়ি হলো সেই বাড়ি যেখানে এতিম রয়েছে এবং তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা হয়। আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট বাড়ি হলো যেখানে এতিম রয়েছে কিন্তু তার সাথে খারাপ আচরণ করা হয়। আমি ও এতিম প্রতিপালনকারী জান্নাতে এমনভাবে অবস্থান করব।” (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৬৭৯; আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস: ১৩৭)

বিএনএ, এসজিএন/ হাসনা


শিরোনাম বিএনএ