বিএনএ, চট্টগ্রাম: আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় ৭৩২টি আগ্নেয়াস্ত্র ইস্যু করা হয়েছিল। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী সেসব আগ্নেয়াস্ত্রের ৬০১টি জমা পড়লেও এখনও ১৩১টি জমা পড়েনি।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) থেকে যৌথ অভিযান শুরু হয়েছে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করার ঘোষণা আসার পর মঙ্গলবার রাত ১২টার মধ্যে এসব অস্ত্র জমা দিতে বলা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা না দিলে এসব অস্ত্রকেও অবৈধ ঘোষণা করা হবে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয় ।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সাড়ে ১৫ বছরে সিএমপির ১৬ থানায় ৪৫৪টি এবং জেলার ১৫ থানায় ২৭৮টি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। এর মধ্যে সিএমপিতে বৈধ অস্ত্র জমা পড়েছে ৩৬১টি আর বাকি ৯৩টি। অন্যদিকে জেলায় জমা পড়েছে ২৪০টি অস্ত্র আর বাকি ৩৮টি অস্ত্র। কোতোয়ালিতে ৫৩টি, বাকলিয়ায় ৫টি, সদরঘাটে ২১টি, চকবাজারে ৩১টি, চান্দগাঁওয়ে ২৫টি, পাঁচলাইশে ৯৫টি, খুলশীতে ৫০টি, বায়েজিদ বোস্তামিতে ৮টি, ডবলমুরিংয়ে ১৭টি, হালিশহরে ১৭টি, পাহাড়তলীতে ৯টি, আকবরশাহতে ১টি, বন্দরে ১২টি, ইপিজেডে ৭টি, পতেঙ্গায় ৩টি এবং কর্ণফুলী থানায় ৭টি অস্ত্র জমা পড়েছে। অস্ত্রের পাশাপাশি এসব থানায় জমা পড়েছে ১৯ হাজার ৬২৬ রাউন্ড গুলি। চট্টগ্রামের বাইরে লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্রও চট্টগ্রামের থানা গুলোতে জমা হয়েছে। খুলশী থানায় জমা হয়েছে বিভিন্ন জেলার ২০টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র। নোয়াখালী জেলার লাইসেন্স করা দুটি অস্ত্র জমা হয়েছে নগরের ডবলমুরিং থানায়। পাহাড়তলী থানায় লাইসেন্স করা একটি অস্ত্র ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা পশ্চিম থানায় এবং আরেকটি সিএমপির পাঁচলাইশ থানায় জমা হয়েছে। আকবরশাহ থানার লাইসেন্স করা একটি অস্ত্র সীতাকুণ্ড থানায় এবং সীতাকুণ্ড থানার লাইসেন্স করা একটি অস্ত্র আকবরশাহ থানায় জমা হয়েছে। কর্ণফুলী থানার দুইটি অস্ত্র ডবলমুরিং থানায় ও একটি অস্ত্র খুলশী থানায় জমা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গত ৫ আগস্ট পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। পরে ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে ছাত্র-জনতার ওপর আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালায়। এমন পরিস্তিতিতে গত ২৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বেসামরিক জনগণকে গত ১৫ বছরে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে গোলাবারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (এডিসি-মিডিয়া) কাজী মো. তারেক আজিজ জানান, যারা এখন অস্ত্র জমা দেননি তাদের তালিকা করে পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনএনিউজ/ রেহানা