বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৪৭ হাজার ৯৭৯টি কোরবানির পশু হাটে উঠার অপেক্ষায় রয়েছে। যা চাহিদার বিপরীতে ৯ হাজার ১৬৪টি পশু বেশি রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সেতু ভূষণ দাশ। তিনি জানান, এ বছর উপজেলায় ১হাজার ৭৫৭ জন খামারি বিক্রয়ের জন্য ৪৭ হাজার ৯৭৯টি পশু হৃষ্টপুষ্ট করেছেন।
এর মধ্যে গরু ২৭ হাজার ৭৪৪টি, মহিষ ৬ হাজার ১১০টি, ছাগল ১১ হাজার ৬৪০ ও ভেড়া ২ হাজার ৪৮৫টি। এর বিপরীতে চাহিদা রয়েছে ৩৮ হাজার ৮১৫টি। গতবছর চাহিদা ছিলো ৩৬ হাজার ৮৬৪টি। সেই তুলনায় এ বছর ১ হাজার ৯৫১টি পশুর চাহিদা বেড়েছে। বোয়ালখালীতে পশুর হাট রয়েছে ১৪টি। এর মধ্যে স্থায়ী হাট ৩টি ও অস্থায়ী হাট ১১টি। এসব হাট এখনো জমে উঠেনি। আগামী সপ্তাহ থেকে এসব হাট ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে সরব হয়ে উঠবে বলে জানান তিনি।
উপজেলার তাজোয়ার ক্যাটেল রাঞ্চের পরিচালক মো. সুমন খামারে এবার দুইশত গরু মোটাতাজা করেছেন। এর মধ্যে ৩০-৪০টি বড় গরু। বড় গরুর বাজার মূল্য ৩ লাখ থেকে ৬ লাখ টাকা এবং মাঝারী ও ছোট সাইজের গরুর দাম হাঁকছেন এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা।
তিনি বলেন, বোয়ালখালীতে ছোট ও মাঝারী গরুর চাহিদা বেশি। অনেকেই ইতিমধ্যে খামার থেকে গরু কোরবানির জন্য পছন্দ করেছেন। গো-খাদ্য ও শ্রমিকের মজুরি বাড়তি হওয়ায় গরুর উপযুক্ত দাম না পেলে লোকসান হবে।
সারোয়াতলী ইউনিয়নের পূর্ব খিতাপচর গ্রামের খামারি হক এগ্রোর স্বত্ত্বাধিকারী মো. তানভীরুল হক ইমন বলেন, খামারে ৪০টি মাঝারি ও ছোট সাইজের গরু রয়েছে। এসব গরু ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে রয়েছে। এছাড়া ৩০টি ছাগল বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন। ছাগলের দাম ১০ হাজার ৩০ হাজার টাকা। তবে পশুর মূল্য গতবারের তুলনায় এবার কিছুটা চড়া বলেন জানান এ খামারি। ইমনের দাবি, গো-খাদ্যের মূল্য বাড়তি থাকায় দামে ছাড় দিতে পারছেন না। ফলে উচিত মূল্য না পেলে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের বার আউলিয়া এগ্রো ট্রেডার্স বহুমুখী ফার্মের স্বত্ত্বাধিকারী মো. ইউছুফ বলেন, ২ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা মূল্যের ৫০টি বড় গরু বিক্রয়ের জন্য মোটাতাজা করেছেন। গতবারের তুলনায় এবার গরুর মূল্য ২০ থেকে ২৫ শতাংশ দাম বাড়তি রয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গতবার গরু মোটাতাজা করে কাঙ্খিত মূল্য পাওয়া যায়নি। গুনতে হয়েছে লোকসান।
খামারিরা গরুর দাম বেশি হাঁকছেন জানিয়ে উপজেলা সদরের আবদুল করিম বলেন, প্রতিবারই খামারিরা গরুর দাম বিভিন্ন অজুহাতে বেশি চেয়ে থাকে। অথচ মৌসুমী ব্যবসায়ীরা এর চেয়ে অনেক কম দামে গরু বিক্রয় করে।
আব্দুল জব্বার জানান, এখনো অনেক সময় আছে। ঈদের দুই-তিনদিন আগে হাট থেকে কোরবানির পশু কিনবেন তিনি। এমনিতেই সবকিছুর দাম এখন চড়া। আয়ের সাথে ব্যয়ের সঙ্গতি করা যাচ্ছে না। ফলে আগেভাগে নয়, হাট ঘুরেই পছন্দের গরু কিনবেন তিনি।
ছেলে মেয়েদের পছন্দ অনুযায়ী গতবার লাল রঙের গরু কিনেছিলেন আহম্মদ হোসেন। তিনি বলেন, ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার নিচে এখন গরুই মিলছে না। সময়তো আছে। দেখি, কি হয়।
বিএনএনিউজ/ বাবর মুনাফ