29 C
আবহাওয়া
৫:৪৩ অপরাহ্ণ - জুলাই ৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » সেশনজটের শঙ্কায় রাবি শিক্ষার্থীরা!

সেশনজটের শঙ্কায় রাবি শিক্ষার্থীরা!


।।সৈয়দ সাকিব।।

বিএনএ, রাবি : সর্বজনীন পেনশন স্কিম—’প্রত্যয়’ বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন। এরই অংশ হিসেবে সোমবার (১ জুলাই) থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

সরকারের তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি; শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে একেবারেই নিশ্চুপ শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে গতকাল সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানিয়েছেন, এই আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না। অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্য ও পেনশন কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকেরা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এ অচলাবস্থার কারণে সেশনজটের শঙ্কায় শিক্ষার্থীরা। তবে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে তা মেকআপ করার কথা জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

শিক্ষকরা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি, ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের পাশাপাশি হল প্রাধ্যক্ষের অফিস এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি বন্ধ থাকবে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ পরান বলেন, “শিক্ষকরা যেহেতু ক্লাস-পরীক্ষা পুরোপুরি বন্ধ করে আন্দোলন করছে, সেহেতু এই আন্দোলন অবশ্যই শিক্ষার্থীদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। শিক্ষকদের আন্দোলন যৌক্তিক হলেও কোনো অগ্রসর চিন্তাশীল রাষ্ট্রে এভাবে শিক্ষা-কার্যক্রম বন্ধ রাখা নিঃসন্দেহে অযৌক্তিক। এতে আমাদের মধ্যে সেশনজটের শঙ্কা যেমন বাড়ছে, তেমনি আমরা শিক্ষামূলক কার্যক্রম থেকেও ক্রমে দূরে সরে পড়ছি।”

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জুলাই মাসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল হওয়ার কথা ছিল। শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতির কারণে কিছু বিভাগ পরীক্ষা স্থগিত করেছে; কয়েকটি বিভাগ পরীক্ষার রুটিনে পরিবর্তন এনেছে।

করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকায় যে সেশনজট তৈরি হয়েছিল, তা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হচ্ছিল বিভাগগুলো; ৬ মাসের সেমিস্টার ৪ মাসে শেষ করার পরিকল্পনাও নেয় কোনো কোনো বিভাগ। তবে বর্তমানে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা একাডেমিক দিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাব্বির হোসাইন জানান, “বর্তমানে শিক্ষকদের আন্দোলনে প্রথমত আমাদের একাডেমিক কারিকুলামে ব্যাঘাত ঘটছে। করোনার কারণে সব ডিপার্টমেন্টেই সেশনজট বেঁধে আছে, সেগুলো আরও ত্বরান্বিত হতে পারে। এছাড়া অনেক ডিপার্টমেন্টের পরীক্ষা চলমান, তাদের পরীক্ষা বন্ধ হয়ে আছে; এতে করে শিক্ষার্থীরা হতাশ হয়ে যেতে পারে। গরমের ছুটি ও ঈদের ছুটি একসাথে হওয়ায় আমরা অনেক ছুটি পেয়েছি; এখন আবার ক্লাস পরীক্ষা অফ থাকায় শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার ভিতরে আসতে পারছে না।”

তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, “সেশনজটের মতো কোনো সমস্যা হবে না বলে আশা করছি; আর যদি হয়ও তাহলে আমরা তা এক্সট্রা ক্লাস নেওয়ার মাধ্যমে মেকআপ করার চেষ্টা করব। ছুটির দিনে আমরা ক্লাস নিয়ে এটা করতে পারি। করোনা পার করে যেমন আমরা সবকিছু গুছিয়ে নিতে পেরেছি; এবারও পারব।”

তিনি আরো বলেন, “ক্যাম্পাসগুলো টোটাল শাট-ডাউনে আছে; এখনও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সাথে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। গত তিন মাস ধরে বিভিন্ন প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে, মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি করে আসছি; তাতেও কোনো কাজ হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই আমরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে এ আন্দোলনে নেমেছি।”

পেনশন কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা প্রত্যাখ্যান

এদিকে গতকাল (২ জুলাই) জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের দেওয়া বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।

মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের মূল ফটকে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া এ ঘোষণা দেন।

পেনশন কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা প্রত্যাখ্যান করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ওমর ফারুক সরকার জানান, “গতকাল এই প্রত্যয় স্কিম সম্পর্কে একটি ব্যাখ্যা আমরা দেখেছি; এখানে সন্তোষজনক কিছুই নেই। আমরা এই ব্যাখ্যা প্রত্যাখান করে আন্দোলন চলমান রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি; রাবি শিক্ষক সমিতি জরুরি সভা করে এ বিষয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিবে।”

বিএনএনিউজ/এইচ.এম।

Loading


শিরোনাম বিএনএ