30 C
আবহাওয়া
৩:১৬ অপরাহ্ণ - মার্চ ২৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ঢাবি ছাত্রলীগ নেতার আত্মহত্যাচেষ্টা

ঢাবি ছাত্রলীগ নেতার আত্মহত্যাচেষ্টা

ঢাবি ছাত্রলীগ নেতার আত্মহত্যাচেষ্টা

বিএনএ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা এসএম এহসান উল্লাহ ওরফে ধ্রুব তারই এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘অপমান’ ও ‘অন্যায়’ করার অভিযোগ তুলে ‘আত্মহত্যার চেষ্টা’ করেছেন।

এহসান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণবিষয়ক উপসম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক তানজীমউদ্দিন খানের নাম উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে ওই দুটি অভিযোগ তুলে গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাত সাড়ে আটটার দিকে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন এহসান। এরপরই তার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না বলে জানান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

পরে রাত পৌনে একটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। এরপর সেখানে এসে জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন হল থেকে ছাত্রলীগের আরও নেতাকর্মী।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অবস্থান চলাকালে রাত দেড়টার দিকে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌ হলের পুকুরপাড়ে এহসানকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তখন তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। তার রাজনৈতিক সহকর্মী ও বন্ধুদের থেকে জানা যায়, একসঙ্গে অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন এহসান। এহসানের ফেসবুক পোস্টে একই ইঙ্গিত রয়েছে।

এদিকে এহসানকে পাওয়া গেলেও উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান চালিয়ে যেতে থাকে ছাত্রলীগ। এ অবস্থায় রাত দুইটার দিকে সেখানে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান। সেখানে যান প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানী। প্রক্টরের কাছ থেকে বিচারের আশ্বাস পাওয়ার পর রাত আড়াইটার পর থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে চলে যেতে থাকেন নেতাকর্মীরা।

এদিকে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর তার ফেসবুকে এহসানকে খুঁজে পাওয়া ও হাসপাতালে নেয়ার ছবি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লিখেন, ‘আমার ভাইয়ের কিছু হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। ছাত্রলীগেরও রক্তের মূল্য আছে। প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে রক্তের মূল্য আদায় হবে। জয় বাংলা।’

হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার শহীদ ওরফে শুভ অভিযোগ করেন, ‘ছাত্রলীগ করার কারণে এহসানকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক তানজীমউদ্দিন খান অপমান করেছেন। এ অপমান সহ্য করতে না পেরে এহসান আত্মহননের চেষ্টা করেছেন।’

তবে এহসানকে ‘অপমান’ করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিক্ষক তানজীমউদ্দিন।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এহসানের সঙ্গে বিভাগের এক ছাত্রীর বন্ধুত্ব ছিল। এহসান তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু ছাত্রী তা প্রত্যাখ্যান করেন। পরে ছাত্রী অন্য একজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। এরপর থেকে দুজনের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। কয়েক দিন আগে বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাসফরে যান। সফরের দায়িত্বে ছিলেন বিভাগের শিক্ষক তানজীমউদ্দিন। সফরকে কেন্দ্র করে ছাত্রীর নামে নানা অশালীন কথা ছড়িয়ে পড়ে।

গত মঙ্গলবার শিক্ষক তানজীমউদ্দিনের সঙ্গে এহসানের কথা হয়। তিনিও ওই ছাত্রী সম্পর্কে নানা অভিযোগ করেন। একে ‘গুজব’ বলে আখ্যা দেন তানজীমউদ্দিন। তিনি বৃহস্পতিবার বিকালে ক্লাশে এহসানকে দাঁড়াতে বলেন, গুজব ছড়ানো বন্ধ করতে বলেন। গুজবটি কারা ছড়িয়েছেন, তাদের নামও জানতে চান তানজীমউদ্দিন। কিন্তু এহসান কারও নাম বলতে চাননি। এহসান কথা বলতে থাকলে তাকে ধমকের সুরে থামিয়ে দেন তানজীমউদ্দিন।

ক্লাশে এহসানকে শিক্ষক তানজীমউদ্দিন বলেন, প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার কারণে সহপাঠী সম্পর্কে তিনি (এহসান) এভাবে কুৎসা রটাতে পারেন না। পরে তানজীমউদ্দিন চলে যান। এরপর এহসান আবার তানজীমউদ্দিনের কাছে গিয়ে বলেন, তিনি (তানজীমউদ্দিন) তাকে অপমান করেছেন।

পরে এহসান ও তার কয়েকজন বন্ধুকে ফুচকা খাওয়ান তানজীমউদ্দিন। বিষয়টি নিয়ে আবার তাদের মধ্যে কথা হয়। পরবর্তীতে সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করার বিষয়ে ইঙ্গিত দেন। এতে এহসান লিখেন ‘প্রিয় তানজিম স্যার, আপনার পরে আমার আর কোনো রাগ নেই। ভালো থাকবেন। বাবা মা, ক্ষমা করে দিও।’

এরপর রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদুল্লাহ হলের পুকুর পাড় থেকে তাকে উদ্ধার করা হয় এবং চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। তার বন্ধুদের দাবি, এহসান আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন।

বিএনএনিউজ/এ আর

Loading


শিরোনাম বিএনএ