বিএনএ ঢাকা: দেশে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া কোনো নির্বাচন মানা হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ৩০টি আসনও পাবে না- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, এজন্য তারা সবকিছু দলীয়করণ ও নিয়ন্ত্রণ করেছে।
শনিবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সবশেষ নির্বাচন’ বিষয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
সে সময় তিনি আরও বলেন,দেশে নির্বাচন-নির্বাচন খেলা আর হবে না। নির্বাচন হতে হলে অবশ্যই একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই হতে হবে। বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে যদি কোনো দল সরকারে থাকে, তার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। তাই নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকার থাকলে নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে পারে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বর্তমানে বিরাজনীতিকরণ করছে। সব প্রতিষ্ঠান দলীয়করণ করা হয়েছে। দ্রুতই সরকারের দিন ফুরিয়ে আসছে। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান তৈরি এবং জনগণকে তাদের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ দিয়ে ‘মানে মানে’ ক্ষমতা থেকে সরে যেতে সরকারকে পরামর্শ দেন তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইতিহাস তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিন্তু বিএনপি’র দাবি ছিলো না। এটি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র দাবি ছিলো। তিনি এখন সম্পূর্ণ উল্টো দিকে ঘুরে গেছেন। দাবি আদায়ের জন্য সেদিন ১৭৩ দিন হরতাল করেছেন। গান পাউডার দিয়ে মানুষ হত্যা করেছেন। এখন আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপি নাকি হরতালের পার্টি, জ্বালাও পোড়াও-এর পার্টি। আওয়ামী লীগ যা করেছে তার রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারবে না। ফখরুদ্দিন ও মইনুদ্দিনের সঙ্গে আঁতাত করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। ২০০৮- এ ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনের অধীনে একটি তথাকথিত নির্বাচন হয়েছিলো। সেই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া উড়ে এসে জুড়ে বসেননি। জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তিনি সোজা পথে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। বাঁকা পথে ক্ষমতায় আসেননি। মঈন-ফখরুদ্দিনের সঙ্গে সন্ধি করে আওয়ামী লীগই পেছনের পথ দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, এ কথা দেশের মানুষ জানে। এখনও তাদের সঙ্গে আঁতাত করেই খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আবার মুখে বলছে গণতন্ত্রের কথা। ফলে তাদের এতো ভয়। সরকার দেশের সর্বনাশ করেছে। প্রতি পদে পদে দুর্নীতি করেছে। এখন আবার চেষ্টা করছে যেনতেনভাবে নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে। নির্বাচনে যাতে জনগণ ভোট দিতে না পারে সেজন্য ইভিএম নিয়ে এসেছে তারা। যেটা দিয়ে ভালো করে চুরি করা যায়। এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। বিএনপিকেই এর দায়িত্ব নিতে হবে। আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থান ছাড়া এই সরকারকে সরানো যাবে না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুবুল্লাহ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. দিলারা চৌধুরী ।
বিএনএনিউজ/আরকেসি